
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিন পশ্চিমা দেশ যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া চালু করায় পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে তেহরান।
ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও বৈদেশিক নীতি কমিশনের মুখপাত্র ইব্রাহিম রেজাই জানিয়েছেন, স্ন্যাপব্যাকের প্রতিক্রিয়ায় এনপিটি থেকে প্রত্যাহারের পরিকল্পনার বিষয়ে সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও বৈদেশিক নীতি কমিশন একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। তবে আইনসভা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তাসনিম নিউজ এজেন্সির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া চালু করার ক্ষেত্রে ইউরোপীয়দের অবৈধ পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় অনেক সংসদ সদস্য এনপিটি থেকে প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫টি খসড়া পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুসারে, যদি স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া সক্রিয় করা হয়, তাহলে ইরান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে আইএইএ বোর্ড অফ গভর্নরসকে পারমাণবিক অ-প্রসারণ চুক্তি থেকে প্রত্যাহারের বিষয়ে অবহিত করতে হবে।
মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানের এনপিটিতে থাকার কোনো কারণ নেই। তিনি যুক্তি দেন, এনপিটি এবং আইএইএ-কে ইরানের পারমাণবিক শিল্প এবং প্রযুক্তি উন্নয়নে সহায়তা করার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হলেও, এই সহায়তা প্রদান করা হয়নি।
রেজাই আরও বলেন, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচির শান্তিপূর্ণ প্রকৃতি প্রমাণের জন্য ব্যাপক পরিদর্শন মেনে চলে, কিন্তু আইএইএ তার বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ইরানের বিরুদ্ধে আক্রমণের অজুহাতের পরিস্থিতিও তারা তৈরি করেছে। আমরা আমাদের এনপিটি সদস্যপদ বা আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা থেকে কোনো লাভ দেখিনি এবং তাই এটি চালিয়ে যাওয়ার কোনো কারণ দেখতে পাচ্ছি না।
সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের মন্তব্য, ইরান এনপিটি ত্যাগ করবে না। এ প্রসঙ্গে রেজাই জোর দিয়ে বলেন, ‘পার্লামেন্ট স্বাধীন। এনপিটি থেকে প্রত্যাহারের জন্য জাতীয় ঐকমত্য প্রয়োজন। ইরানি জাতির প্রতিনিধিরা সংসদে জড়ো হয়েছেন, সরকার নয়। প্রেসিডেন্ট সংসদের ওপর তার মতামত চাপিয়ে দিতে পারেন না।’