
পশ্চিমা দেশগুলোর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আসন্ন পদক্ষেপগুলো ‘কিছু একটা করছে সেটি দেখানোর আকাঙ্ক্ষা’ থেকে অনুপ্রাণিত। তবে স্বীকৃতি দিলেও ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা বন্ধ করবে না। দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের অধ্যাপক মোহাম্মদ এলমাসরি এমনটাই বলেছেন।
তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমি মনে করি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং স্থানীয় জনগণের কাছ থেকেও তাদের (পশ্চিমা সরকার) ওপর কিছু করার জন্য চাপ বাড়ছে। এটি (ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির কথা) তাদের কিছু করার বা বলার ধরণ – তারা আসলে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়েই কিছু করেছে।’
অধ্যাপক এলমাসরি আরও বলেন, এই দেশগুলো বাস্তবে পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে – এমন এক অনেক বিষয়ের কথা ভাবতে পারেন – যার মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করা, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা, অথবা শান্তিরক্ষী বাহিনী বা নো-ফ্লাই জোন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো।
তিনি বলেন, তারা এমন সব ধরণের কাজ করতে পারে, যা ইসরায়েলকে আঘাত করবে এবং গণহত্যার শেষ পর্যন্ত থামাতে বাধ্য করবে।
এলমাসরি বলেন, আমাদের সকলেরই এখন ভাবতে হচ্ছে যে, যখন ১৪০টিরও বেশি দেশ ইতোমধ্যেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে – তারা কিছুই করেনি। ইসরায়েল মূলত একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণরূপে অসম্ভব করে তুলেছে, তখনো কেন তারা এই বিশেষ পদক্ষেপকে (স্বীকৃতি) উপযুক্ত বলে মনে করে?
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে দেড় লাখের বেশি বেশি মানুষ আহত হয়েছে। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
চলতি বছরের শুরুতে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর ২৭ মে থেকে ইসরায়েল জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে একটি পৃথক সাহায্য বিতরণ উদ্যোগ শুরু করেছে। এতে সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এই পদক্ষেপের পর গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ আরও প্রকট হয়ে ওঠে।
সেই সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে শত শত মানুষ নিহত হচ্ছে।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু ও তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। উপত্যকাজুড়ে যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।