
সরকারি নীতিমালার আলোকে নৌপথে পণ্য পরিবহন করেও ভাড়ার টাকা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন জাহাজ মালিকরা। তাই আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বকেয়া ভাড়া পরিশোধ না হলে মালিকদের পক্ষে জাহাজ চালানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তারা।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে ‘জাহাজ মালিকদের অধিকার রক্ষা এবং পণ্য পরিবহন নীতিমালা-২০২৪ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে’ জরুরি সভায় এমন অভিযোগ করেন তারা। সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশন (বিসিভোয়াক)।
সংগঠনের সভাপতি সাঈদ আহমেদের সভাপতিত্বে জরুরি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন কোস্টাল শিপ ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান গাজী বেলায়েত হোসেন (মিঠু)। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন, বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিঃ মেহবুব কবির। এছাড়া বিসিভোয়াকের নেতা ও সাধারণ জাহাজ মালিকদের অনেকে বক্তৃতা করেন।
বক্তারা বলেন, আমরা পণ্য পরিবহন করে ভাড়ার টাকা পাচ্ছি না। অন্যদিকে আমরা সরকারী নীতিমালা মেনে জাহাজ চালাচ্ছি। কিন্তু আমরা ২ মাসে ১ ট্রিপ পণ্য পরিবহন করছি। অন্যদিকে সিরিয়াল ছাড়া তারা পরিবহন করছে মাসে ৩/৪ ট্রিপ। ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলেও এই ৪/৫ জন পণ্যের এজেন্ট সিন্ডিকেট করে নৌপথকে ধ্বংস করেছে। এখনো এই সিন্ডিকেট দাপটের সাথে অবৈধভাবে জাহাজ চালাচ্ছে। নৌ মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরে বার বার সভা করলেও এর কোন পরিবর্তন হয় নাই।
তারা বলেন, এই সিন্ডিকেটরা আমাদের জাহাজকে পণ্য বোঝাই করে ১১/১২ মাস ভাসমান গোডাউন বানিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। এতে বাজারে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হতে বঞ্চিত হচ্ছে। এই মধ্যসত্বভোগী পণ্যের এজেন্টদের সিন্ডিকেটের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পণ্য পরিবহন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় তারা উক্ত নীতিমালা অমান্য করে চলছে। বার বার নৌ পরিবহন অধিদপ্তর থেকে সিদ্ধান্ত দিলেও তারা নীতিমালাকে অগ্রাহ্য করে নৌপথেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে চলেছে।মালিকদের পাওনা মিটাতে ডিজি শিপিং চিঠি দিলেও সিন্ডিকেট এতে কোন কর্ণপাত করছে না। সাধারণ জাহাজ মালিকগণ স্টাফের বেতন দিতে পারছে না। ইতিমধ্যে প্রায় ৮০০ জাহাজ স্ক্র্যাপ হয়ে গেছে।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান না হলে তাদের পক্ষে জাহাজ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। এর দায়-দায়িত্ব নৌ পরিবহন অধিদপ্তরকে নিতে হবে। সময় তারা চার দফা দাবি জান। তা হলো- আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পণ্যের এজেন্টেগণ সাধারণ মালিকদের সকল পাওনা পরিশোধ করতে হবে। সকল জাহাজ সরকার ঘোষিত নীতিমালা অনুযায়ী চলাচল করতে হবে। ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলের সিন্ডিকেট আওতায় আনতে হবে। সকল জাহাজের সম অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।