
নেপালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্মের ওপর থেকে সরকারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং দেশটির দুর্নীতির সংস্কৃতির অবসানের দাবিতে রাজধানী কাঠমান্ডুতে হাজারও তরুণ বিক্ষোভ করেছে। জেন-জি বিক্ষোভকারীরা দেশটির নিউ বানেশ্বরে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে। তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এবং গেট টপকে সেখানে প্রবেশ করে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির কথা থাকলেও জেন-জিদের বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বানেশ্বর ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কারফিউ জারি করেছে কাঠমান্ডুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়।
এদিকে বাংলাদেশ ফুটবল দল নেপালে অবস্থানে করছে। আজ স্থানীয় সময় বিকালে জাতীয় দলের অনুশীলন করার পূর্বনির্ধারিত সূচি ছিলো। আন্দোলনের কারণে সেখানে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অনুশীলন বন্ধ রয়েছে। কারণ সেখানে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের কারণে দলের হোটেল থেকে বের হওয়ার অনুমতি নেই। এই প্রতিবাদের কারণে বাংলাদেশ দলের হোটেল থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, ফলে দ্বিতীয় ম্যাচের প্রস্তুতি ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাফুফে ম্যানেজার সাদমান সাকিব জানান, ‘আজ অনুশীলনের নির্ধারিত সময় ছিল বিকাল তিনটায়। ২টা ১৫ মিনিটে হোটেলের লবিতে এসে জানতে পারি এখন মাঠের উদ্দেশ্যে বের হওয়া যাবে না। স্টেডিয়ামের আশেপাশে শিক্ষার্থীরা অবরোধ করেছে। অনুশীলনের পরবর্তী আপডেট দ্রুতই জানানো হবে।’
অন্যদিকে প্রথম প্রীতি ম্যাচে নেপালকে পরাস্ত করতে না পারায় লাল-সবুজের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে হিমালয়কন্যার দেশটি। দুই প্রীতি ম্যাচের প্রথমটিতে শনিবার স্বাগতিক নেপালের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছেন জামাল ভূঁইয়ারা। ম্যাচে আশানুরূপ পারফর্ম করতে পারেনি স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ার কাবরেরার শিষ্যরা।
তবে এই খেলার মাধ্যমে পারফরম্যান্সের উন্নতির সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন দলের ডিফেন্ডার রহমত মিয়া। হোটেল লবিতে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ফুটবলারই চেষ্টা করে নিজেদের জায়গা থেকে মাঠে ভালো করার। আমরা এখানে আসার আগে যে অনুশীলন করেছিলাম মাঠে তার প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করেছি। যদিও ফল নির্ভর করে ভাগ্যর ওপর। আমরা চেষ্টা করছি। তবে আমি মনে করি প্রত্যেক দলেরই উন্নতি করার সুযোগ থাকে প্রতিদিন।’
নেপাল এবং হংকং-এই দুই দলের ব্যাপারেও কথা বলেছেন রহমত মিয়া, ‘নেপাল কিছুদিন আগে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলেছে। ম্যাচটি খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। আসলে নেপালের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাটিতে এসে খেলা সহজ নয়। যারা আগে এসেছে এবং খেলেছে তারা বলতে পারবে। কিন্তু আমি মনে করি আমাদের দল ভালো করছে এবং সামনেও ভালো করবে।’
নেপালের দশরথ স্টেডিয়াম নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন রহমত, ‘এই মাঠের অবস্থা ভালো না। বাইরে থেকে যেমনটা দেখা যায় ভেতরটা একেবারেই সেরকম নয়। মাঠ ভারী এবং ধীরগতির, বড় বড় ঘাস। পাশাপাশি পানিও দেওয়া থাকে না। সাধারণত আমরা দেশে যখন অনুশীলন করি তার আগে মাঠে পানি দিয়ে নিই। সব খানেই আমরা অনুশীলন বা ম্যাচের আগে পানি দিয়ে নিই মাঠ ভালো রাখার জন্য। দশরথের মাঠ এমনিতেই ভারী, তার সঙ্গে ঘাস বড় এবং পানিও দেওয়া না।’
কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়াম নিয়ে অভিযোগের কমতি নেই। গত বছরের মার্চে মাঠের বাজে অবস্থার কারণে এখানে খেলতে চায়নি বাহরাইন। এরপর থেকে ফিফা ও এএফসির কাগজে-কলমে ম্যাচ আয়োজনে ‘অনুপযুক্ত’ এই মাঠ। অথচ সেই মাঠেই এই সিরিজে নেপালের মুখোমুখি বাংলাদেশ।
২০২৩ সালের ১৭ নভেম্বর ইয়েমেনের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ ছিল দশরথে সর্বশেষ ফিফা বা এএফসি স্বীকৃতি প্রতিযোগিতা। এরপর থেকেই মাঠটি আন্তর্জাতিক সূচি থেকে বাদ। তবে প্রীতি ম্যাচ হওয়ায় বাংলাদেশ এই মাঠেই খেলছে নেপালের বিপক্ষে।