
নেপালের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নতুন প্রজন্মের নেতারা ছয় জন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। দুর্নীতি ও সরকারি অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে জেন-জি তরুণদের বিক্ষোভের ফলে সৃষ্ট চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল যখন কাজ করে চলছেন, তখন এই চাপ জোরালো হয়েছে।
জনসাধারণের ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির পদত্যাগের পর প্রেসিডেন্ট সংকট মোকাবেলায় রাজনৈতিক দল এবং সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ জোরদার করেছেন। সেনাবাহিনী জেন-জিদের সঙ্গে দলগুলোকে আলোচনার সুযোগ করে দিচ্ছে। তারা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে নিয়োগের জন্য জেন-জি বিক্ষোভকারী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঐকমত্য তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা নিয়ে জনসাধারণের উদ্বেগের মধ্যে নেপালি কংগ্রেস, সিপিএন-ইউএমএল, মাওবাদী কেন্দ্র এবং ইউনিফাইড সোশ্যালিস্টের দ্বিতীয় স্তরের নেতারা জেন-জিদের দাবির প্রতিধ্বনি করেচ্ছে। তাদের মূল প্রস্তাব: কয়েক দশক ধরে নেপালি রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী ছয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে অবসরে পাঠান।
রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র অনুসারে, তরুণ নেতারা নেতারা বিশ্বাস করেন, কে পি শর্মা, শের বাহাদুর দেউবা, পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ড, মাধব কুমার নেপাল, ঝলনাথ খানাল এবং ড. বাবুরাম ভট্টরাইয়ের উচিৎ নিজেরা সরে গিয়ে নতুন নেতৃত্বের পথ প্রশস্ত করা।
জানা গেছে, ছয় জনই সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা দিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। চারটি দলেরই কর্মকর্তা এবং সিনিয়র নেতারা এই উদ্যোগের সমন্বয় করছেন।
বামপন্থী দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, ‘আমরা ছয় জন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি যৌথ বিবৃতি পাওয়ার জন্য কাজ করছি, যাতে তাদের অবসর নেওয়ার এবং দেশকে নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।’
ইউনিফাইড সোশ্যালিস্ট পার্টির সিনিয়র নেতা ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঝালনাথ খানাল ইতোমধ্যে এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন। দলটির সিনিয়র এক নেতা বলেন, ‘কমরেড ঝালনাথ সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে আসতে প্রস্তুত।’
ড. বাবুরাম ভট্টরাইও ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। দলের সূত্র বলেছে, ‘বাবুরাম কিছু ভালো ধারণা তুলে ধরেছেন। তিনিও এই প্রস্তাবের সমর্থক বলে মনে হচ্ছে।’
নেপালি কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ আলোচনা
অবসর গ্রহণের উদ্যোগ নিয়ে নেপালি কংগ্রেসের অভ্যন্তরেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। অন্যান্য দলের নেতাদের মতো এমপিরাও প্রস্তাবটিকে অনুকূলভাবে দেখছেন।
একজন নেপালি কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘আমরা আমাদের মূল দলের মধ্যে এই প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করেছি। যদি অন্যান্য দলের নেতারা এতে সম্মত হন, তাহলে আমরা প্রেসিডেন্ট দেউবার কাছেও এটি উপস্থাপন করতে ইচ্ছুক।’
অভ্যন্তরীণ সূত্রের মতে, যদি কেপি অলি, প্রচণ্ড এবং মাধব নেপালও অবসর নিতে রাজি হন, তাহলে এই কৌশল একটি নতুন রাজনৈতিক যুগের সূচনা করতে পারে।
তথ্যসূত্র: খবর হাব (নেপালি সংবাদমাধ্যম)