
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়েছে, চলতি বছর ২ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২১ দিনে সারা দেশে কমপক্ষে ৯টি পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলাসহ প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থায় নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা উদ্যাপনে ক্রমান্বয়ে আশঙ্কা ও উদ্বেগ বাড়ছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ধর্মীয় বৈষম্যবিরোধী এই মানবাধিকার সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথের সই করা এক সংবাদ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টা, সেনাবাহিনীর প্রধান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের উচ্চতম পর্যায় থেকে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্যাপনের ব্যাপারে পূজার্থীদের যতই আশ্বস্ত করা হোক না কেন, পূজার প্রাক্কালে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা কোনোভাবেই আশান্বিত হতে পারছে না। বরং আশঙ্কা ও উদ্বেগ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।’
বিবৃতিতে বলেছে, ২ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৯টি পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা তুলে ধরা হয়। ঐক্য পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ দিনে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের হামিন্দপুরে, পঞ্চগড় সদর উপজেলায়, কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নে, নেত্রকোনার সদর উপজেলার কান্দুলিয়ায়, গাজীপুর নগরের কাশিমপুরে, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায়, মুন্সিগঞ্জ সিরাজদিখানের রাজারনগর ইউনিয়নে, ঝিনাইদহের শৈলকুপার ফুলহরি গ্রামে, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলাসহ প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, কুড়িগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ কিছু জেলায় পূজাকেন্দ্রিক সংঘটিত গোলযোগের সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে।
ঐক্য পরিষদ বলছে, ১০ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড় সদর উপজেলার আয়মা ঝলই মহারানী বাঁধ এলাকার কালীমন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। সকালে স্থানীয় ভক্তরা মন্দিরে গিয়ে প্রতিমা ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান, এতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর পুলিশ একজনকে আটক করে জানায়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অভিযোগ, প্রতিবারই অপরাধীদের আড়াল করতে একই কৌশল ব্যবহার করা হয়। আসন্ন দুর্গাপূজা ঘিরে সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে।
ঐক্য পরিষদ মনে করে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় পূজামণ্ডপে হামলার এসব ঘটনায় পূজার্থী জনমনে ভয়ভীতি ও শঙ্কা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে এবং সামনের পূজা চলাকালীন দিনগুলোতে অধিকতর সহিংস ঘটনার আশঙ্কা করছে। ঐক্য পরিষদ পূজার প্রাক্কালে বিদ্যমান পরিস্থিতি সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে উৎসব চলাকালীন সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।