
সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘নাচ–গান হওয়ার খবর শুনে’ বাধা দিতে এসেছিলেন একদল ব্যক্তি।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এখানে নাচ-গান হবে শুনে বাধা দিতে এসেছিলেন একদল লোক।
তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের জানিয়েছেন, এখানে নাচ–গান নয়, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর অনুষ্ঠান হবে। সেটা শুনে তারা চলে গেছেন।
একই কথা বলেছেন পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী।
তিনি বলেন, এটা ভুল–বোঝাবুঝি ছিল। এখানে নাচ–গান হবে মনে করে যারা এসেছিলেন, তাদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলা হয়। তারপর তারা চলে যান।
সংগীত জগতের কিংবদন্তি সাধক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ১৮৬২ সালের ৮ অক্টোবর তৎকালীন ত্রিপুরা প্রদেশের শিবপুর গ্রামে, যা বর্তমানে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
শৈশবে ‘আলম’ নামে পরিচিত আলাউদ্দিন খাঁ ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতি ও সুরের প্রতি অনুরাগী ছিলেন।
তার সংগীতগুরু ছিলেন আগরতলার রাজদরবারের সভাসংগীতজ্ঞ ও তানসেন বংশীয় রবাবী ওস্তাদ কাশিম আলী খাঁ। মাত্র দশ বছর বয়সে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাত্রাদলে যোগ দেন এবং গ্রাম-বাংলার জারি, সারি, বাউলসহ বিভিন্ন লোকগানের সঙ্গে পরিচিত হন।
পরে কলকাতায় গিয়ে প্রখ্যাত সঙ্গীতসাধক গোপালকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের শিষ্যত্ব নেন। গুরু মৃত্যুর পর তিনি যন্ত্রসংগীতে মনোযোগ দেন এবং বাঁশি, সেতার, বেহালা, তবলাসহ বহু বাদ্যযন্ত্রে পারদর্শিতা অর্জন করেন।
অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার’ (১৯৫২), ‘পদ্মভূষণ’ (১৯৫৮), ‘পদ্মবিভূষণ’ (১৯৭১) ও ‘বিশ্বভারতীর দেশিকোত্তম’ উপাধিতে ভূষিত হন তিনি। ১৯৭২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের মাইহারে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।