
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক সংঘাতের জেরে এবং শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দিবাগত রাতে পাকিস্তানের বিমান হামলায় আফগানিস্তানের স্থানীয় তিন ক্রিকেটার নিহত হওয়ার প্রতিবাদে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি) আগামী মাসে হতে যাওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে নাম প্রত্যাহার করেছে। এই পরিস্থিতিতে রশিদ খানদের জায়গায় সেই সিরিজে জিম্বাবুয়েকে যুক্ত করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সূচি অপরিবর্তিত রেখে নতুন করে জিম্বাবুয়েকে যুক্ত করার কথা জানিয়েছে পিসিবি। ১৭ থেকে ২৯ নভেম্বর পাকিস্তানের লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে এই সিরিজটি অনুষ্ঠিত হবে, যা মূলত ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির লক্ষ্যে আয়োজন করা হচ্ছে।
১৭ নভেম্বর রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিক পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের ম্যাচ দিয়ে এই ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু হবে। একই মাঠে ১৯ নভেম্বর লড়বে শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে, এবং ২২ নভেম্বর লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হবে।
সবমিলিয়ে প্রতিটি দল দু’বার করে মুখোমুখি হওয়ার পর শীর্ষ দুই দল ২৯ নভেম্বর লাহোরে ফাইনাল খেলবে। বর্তমানে পাকিস্তান ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দুই টেস্টের সিরিজ খেলছে, যার পরে দুই দল ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলবে।
শুক্রবার আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানের বিমান হামলায় তিন স্থানীয় ক্রিকেটার নিহত হন। তারা প্রদেশের রাজধানী শারানায় ‘ফ্রেন্ডলি’ ম্যাচ খেলে বাড়ি ফেরার পথে ওই হামলার শিকার হন বলে জানা গেছে। আফগান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি) জানায়, ‘তাদের মৃত্যু আমাদের ক্রীড়া কমিউনিটির জন্য একটি বিশাল ক্ষতি। যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা আসন্ন ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আফগান টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক রশিদ খান এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পাকিস্তানের হামলাকে ‘বর্বর ও অনৈতিক’ উল্লেখ করে বলেন, ‘বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু বানানো নিশ্চিতভাবে অনৈতিক এবং বর্বর আচরণ। এই অন্যায্য ও বেআইনি কর্মকাণ্ড মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন, যা কারও নজর এড়ায় না।’ তিনি আসন্ন ফিক্সচার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এসিবিকে স্বাগত জানান এবং বলেন, ‘কঠিন এই সময়ে আমি মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি, আমাদের জাতীয় মর্যাদা অবশ্যই সবকিছুর ঊর্ধ্বে।’
অন্যদিকে, পাকিস্তানি কিংবদন্তি শহীদ আফ্রিদিও নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে লিখেছেন, ‘পাকিস্তান সব সময় আফগান ভাইদের পাশে থেকেছে, তাদের দুঃখ-কষ্টকে নিজেদের দুঃখ হিসেবে দেখেছে। সীমান্ত খুলে দিয়েছে ভাইদের জন্য। ৪০ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে।’
তিনি জানান, তিনি নিজেও ৩৫০টি আফগান পরিবারের দেখাশোনা করেন। তবে তিনি দুঃখের সঙ্গে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তান এসব উপকার ভুলে সীমান্তে প্রকাশ্য আগ্রাসন চালিয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সেনারা যথাযথ জবাব দিয়েছে।’