
কেউ নাস্তা খেয়েছেন, কেউ ভালোভাবে খেতেও পারেননি। নেপালের উদ্দেশ্যে বেলা দেড়টার ফ্লাইট ধরতে হবে। তড়িঘড়ি করে বিমানবন্দরে পৌঁছে বোর্ডিং পাশ নিয়ে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতাও হয়েছে। কিন্তু জাতীয় ফুটবল দল বাংলাদেশ বিমানে উঠতে পারেননি। তার আগেই খবর এলো নির্ধারিত সময়ে ফ্লাইট যাচ্ছে না। হজরত শাহ জালাল বিমানবন্দরের বিমান কর্তৃপক্ষ জাতীয় দলকে জানিয়েছে, নতুন সিডিউলে নেপালে যাবে বাংলাদেশ বিমান। জাতীয় দলের ম্যানেজার আমের খান জানিয়েছেন, তাদেরকে সন্ধ্যা ৭টার ফ্লাইট দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে মুখে মুখে খবর আসে জাতীয় দলকে নিয়ে যে বিমানটি নেপালের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেই বিমানের তেলের ট্যাংক ফুটো হয়ে গেছে। বিমানের একজন পুরুষ যাত্রী ইত্তেফাকে জানিয়েছেন, ভাগ্য ভালো আকাশে উড়ার পর বিষয়টি ধরা পড়েনি। বিমান ছাড়ার আগেই নজরে এসেছে তেলের ট্যাংক থেকে জ্বালানি চুয়ে চুয়ে পড়ছে।’
বিমান বাংলাদেশের জনসংযোগ কর্মকর্তা রওশন কবীর গতকাল সন্ধ্যায় ইত্তেফাককে জানিয়েছেন, টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে দেড়টায় বিমান ছেড়ে যেতে পারেনি।’ তিনি বলেন, ‘আমি যতদূর জানি বোর্ডিং হয়েছে এবং সন্ধ্যা ৭টায় বিমান ছেড়ে গেছে।’ কী ধরনের টেকনিক্যাল প্রবলেম? জানতে চাইলে তিনি বলতে পারেননি। তেলের ট্যাংক ফুটো হয়ে তেল পড়ছে বলে যাত্রীদের কাছ থেকে শোনা খবর রওশন কবীরকে বলা হলে তিনি এর জবাবে জানান ‘আমি জানি টেকনিক্যাল ত্রুটি।’ ‘তেলের ট্যাংক ফুটো হয়ে কিছু হয়েছে কি না, তা জানা নাই। আমি জেনে আপনাকে (ইত্তেফাক) জানাতে পারবো। আমি আপনাকে পরে জানাচ্ছি।’ রওশন কবীরের কাছ থেকে অবশ্য আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, তিনি আর ফোন করেননি।
দেশের জাতীয় ফুটবল দল রাষ্ট্রীয় বিমানে চড়ে বাইরে যাবে, ৬ ও ৯ সেপ্টেম্বর নেপালের বিপক্ষে ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলতে যাবে, কিন্তু ফুটবলাররা বিমানবন্দরে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হলেন। বেলা ১২টার আগে বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন ফুটবলাররা। ইমিগ্রেশন হওয়ার পর সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিমানের অপেক্ষা করতে গেলে খেলোয়াড়দের শরীরে ক্লান্তি ভর করবে। পাসপোর্টে বহিরাগমনের ইমিগ্রেশন সিল দেওয়া হয়ে গেছে। তখন আর বেরও হওয়া যাবে না। অথচ এই লম্বা সময়ের জন্য বিশ্রামেরও ব্যবস্থা নেই। তা ছাড়া নেপালে দুপুরে পৌঁছে বিকালে অনুশীলন করার কথা থাকলেও সেটি হলো না বাংলাদেশ বিমানের অব্যবস্থাপনার কারণে।
বিমানের অপেক্ষায় থেকে বিশ্রামের পাশাপাশি খেলোয়াড়রা খাওয়ার কষ্ট করছিলেন। দলের ম্যানেজার আমের খান জানিয়েছেন, আমরা বিমানের স্টেশন ম্যানেজার, এমডির সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। লাউঞ্জ খুঁজছিলাম, পাচ্ছিলাম না, বিমানের সঙ্গে বিমান বন্দরের খাওয়ার রেস্টুরেন্টগুলোর সঙ্গেও অ্যাগ্রিমেন্ট নেই।’ বাফুফে থেকে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ইউসিবির লাউঞ্জ পুরোটা ব্যবহার করার অনুমতি পেয়ে তারা খুশি। খেলোয়াড়রা বিশ্রামের সুযোগ পেয়েছে, সব সুবিধা দিয়েছে ইউসিবি। আমের বলেন, ‘আমরা ইউসিবির কাছে কৃতজ্ঞ।’
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিমান জাতীয় পতাকা বহন করে, জাতীয় ফুটবল দলও জাতীয় পতাকা বহন করে। কোনো দেশের জাতীয় দল যখন নিজেদের দেশের বিমানে অন্য দেশে খেলতে যায়, তখন সেই বিমান খেলোয়াড়দের জন্য বিমান কর্তৃপক্ষ বাড়তি নজর দেয়। কিন্তু বাংলাদেশের বিমান যেন উদাসীন। এর আগেও জাতীয় ফুটবল দল বিমানবন্দর থেকে ফিরে এসেছিল।