Dark Mode Light Mode

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Follow Us
Follow Us
English English

ডিডিএলজের ৩০ বছর, রাজ–সিমরানের জাদু চলছেই

ডিডিএলজের ৩০ বছর, রাজ–সিমরানের জাদু চলছেই ডিডিএলজের ৩০ বছর, রাজ–সিমরানের জাদু চলছেই
ডিডিএলজের ৩০ বছর, রাজ–সিমরানের জাদু চলছেই


বলিউডে রোমান্টিক সিনেমা হিসেবে প্রথমেই ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’র (‘ডিডিএলজে’) নামটি মনে পড়ে। শুধু তাই নয় এতে রাজ-সিমরানের চরিত্রে অভিনয় করে বলিউডের সেরা জুটির তকমাও পেয়েছেন শাহরুখ খান ও কাজল। মুক্তির ৩০ বছর পরও রাজ–সিমরানের রসায়নে বুঁদ হয়ে আছে অনেক দর্শক। আজ সিনেমাটির মুক্তির ৩০ বছর পূর্ণ হচ্ছে।  

১৯৯৫ সালের ২০ অক্টোবর মুক্তি পেয়েছিল আদিত্য চোপড়া পরিচালিত  ‘ডিডিএলজে’।

Advertisement



সিনেমাটির প্রেমকাহিনি শুধু হৃদয় ছুঁয়েই যায়নি, বলিউডে এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেছিল। আর সেই গল্পের স্মরণীয় চরিত্র ছিল সিমরানের বাবা বলদেব সিংয়ের চরিত্র; যাতে অভিনয় করেছিলেন অমরেশ পুরী।

বলদেব চরিত্রটি দ্বন্দ্বের প্রতীক। সিমরানকে বিদেশে পড়াশোনা করতে দেন, বন্ধুদের সঙ্গে ইউরোপ ভ্রমণে পাঠান, আধুনিক পোশাক পরার স্বাধীনতাও দেন। কিন্তু প্রেম-বিয়ের ক্ষেত্রে তিনি কড়া নিয়ন্ত্রণ চান—মেয়ের বিয়ে যেন শুধু তাঁর পছন্দের ছেলের সঙ্গেই হয়। এই নিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতা আজও বলিউডে দেখা যায়।



এতদিন পরেও সিনেমাটিতে শুটিংয়ের স্মৃতি কাজলের কাছে এখনো টাটকা। তিনি বলেন, ‘ওটা সত্যিই অসাধারণ সময় ছিল। আমার বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করছিলাম, খুব মজা লেগেছিল। চিত্রনাট্যটা ছিল দারুণ, আমরা হাসতে হাসতেই শুট করতাম। সুইজারল্যান্ডের বাসে ঘুরে ঘুরে খাওয়া, আড্ডা, কাজ—সবকিছু মিলিয়ে মনে হতো যেন এক লম্বা ছুটির সফরে আছি।’



কাজল জানান, শুটিংয়ের পাগলাটে ঘটনাগুলো আজও ভুলতে পারেন না। ‘এমনও হয়েছে যে গরুর খোঁয়াড়ে শাড়ি পরে শুট করেছি। একবার পাহাড় বেয়ে গড়িয়ে পড়েছিলাম ভুল করে! ভাবতে পারেন—কে আবার ভুল করে গড়িয়ে পড়ে! কিন্তু আমি পড়েছিলাম,’ হাসতে হাসতে বলেন কাজল।

কাজল আরও যোগ করেন, ‘তখন সময় কম ছিল, সূর্য ডোবার আগে একটা দৃশ্য শেষ করতে হতো। কখনো ১৫ মিনিটের মধ্যেই কাপড় পাল্টে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হতো। সেই তাড়াহুড়ো, সেই পাগলামি—সবই আজ মনে পড়লে ভালো লাগে।’

কেবল রাজ–সিনেমার রসায়নই নয়, মুক্তির পরে ঝড় তুলেছিল সিনেমার গানগুলো। ‘মেরে খওয়াবো ম্যায়’, ‘যারা সে ঝুম লু ম্যায়’, ‘তুঝছে দেখা তো’, ‘মেহেন্দি লাগা কে রাখনা’র মতো গানগুলো এখনো সিনেমাপ্রেমীদের মুখে মুখে ফেরে। যতিন–লতিতের সুরে গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন মনপ্রীত কৌর, পামেলা চোপড়া, লতা মুঙ্গেশকর, আশা ভোসলে, অভিজিৎ, কুমার শানু, উদিত নারায়ণ।



যতিন-ললিত জুটি এই সিনেমার গান দিয়েই তুমুল খ্যাতি পান। এক সাক্ষাৎকারে তারা বলেন, ‘আগে আমরা কিছু প্রশংসা পেয়েছিলাম, কিন্তু এই ছবি আমাদের খ্যাতি ও সাফল্যের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। চার-পাঁচ মাস ধরে আমরা গানগুলো তৈরি করেছি। তখন মনে হয়েছিল ভালো হয়েছে, কিন্তু ৩০ বছর ধরে জনপ্রিয় হবে, তা ভাবতেও পারিনি।’

গান রেকর্ডিংয়ের সময় সংগীত সেশনগুলো হতো যশ রাজ পরিবারের বাড়িতে। লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোসলে, যশ চোপড়া—সবার পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা মিলিত হয়ে গানগুলোকে প্রাণ দিয়েছিল। ললিত বলেন, ‘আমরা তখন তরুণ, কিন্তু তাঁদের অভিজ্ঞতা ও সহযোগিতা আমাদের শক্তি জুগিয়েছে। গানগুলো নিয়ে চার-পাঁচ ঘণ্টা ধরে বিস্তারিত আলোচনা হতো।’

উদিত নারায়ণও স্মৃতিচারণ করেন, ‘গান রেকর্ডিংয়ে আমি দেরি করলেও শাহরুখ চার ঘণ্টা অপেক্ষা করছিলেন। রেকর্ডের পর সবাই খুব খুশি হয়েছিল। গানটি তখনই জীবন্ত হয়ে উঠেছিল।’



ললিত মনে করেন, পরিচালক আদিত্য চোপড়া গল্প, চিত্রনাট্য, পরিচালনা তো বটেই; সংগীত নিয়েও ভালো ধারণা রাখেন। সবার মিলিত প্রচেষ্টাতেই প্রাণ পেয়েছিল গানগুলো।

ললিত আরও বলেন, ‘এই সিনেমার সংগীতের সাফল্যের মূল কারণ ছিল এর মূলধারার সুর। প্রতিটি গান, প্রতিটি সুর, প্রতিটি ছন্দ—সবই আমাদের তৈরি। সবার অবদান অসামান্য।’

সিনেমায় কুলজিতের চরিত্রে অভিনয় করেন পারমিত শেঠি। শাহরুখ ও কাজলের বাইরে তাকেও আলাদা করে মনে রেখেছেন দর্শকেরা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, কীভাবে এই চরিত্র পাওয়ার জন্য তাঁকে লড়তে হয়েছে, এমনকি পরিচালক অদিত্য চোপড়াকেও রাজি করাতে হয়েছে!

পারমিত বলেন, ‘প্রথমে এই চরিত্রের জন্য আমাকে বিবেচনা করা হয়নি। আমাকে লড়তে হয়েছে। অদিত্য চোপড়ার কাছে আমার ভিএইচএস রেকর্ডিং দেখানোর পরও, প্রথমে আরেক অভিনেতাকে কাস্ট করা হয়। আমি ভেঙে পড়েছিলাম। আমি জানতাম, এই চরিত্রটি আমার জন্যই।’



পরের ধাপে পারমিত আবার অদিত্যর কাছে গিয়ে স্ক্রিন টেস্টের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘অদিত্য আমাকে ছবির চারটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য দিলেন। আমি নিজে কিছু ডায়ালগ বদলে দিলাম, যাতে আরও পাঞ্জাবি স্বাদ আসে। আমার স্ত্রী অর্চনাও কিছু পরামর্শ দিল। দীর্ঘ বিরতির পর তিনি বললেন, “তুমিই আমার কুলজিত।” আমি খুশিতে লাফ দিয়ে তাকে আলিঙ্গন করেছিলাম।’

মাত্র ৪ কোটি রুপি বাজেটে নির্মিত সিনেমাটি ১০৪ কোটি রুপি আয় করে। ২০১২ সালে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের করা সর্বকালের সেরা ১০০ ভারতীয় সিনেমার তালিকায়ও ছিল এটি।

একটি জাতীয় পুরস্কারসহ ১০টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছিল সিনেমাটি। ফিল্মফেয়ারে ছবিটির জন্য সেরা নির্মাতার পুরস্কার পান আদিত্য চোপড়া। সেরা অভিনেতা ও অভিনেত্রীর পুরস্কার পান শাহরুখ ও কাজল।

‘ডিডিএলজে’র রিমেক নিয়ে অনেকেরই ভাবনায় এলেও এ সিনেমার অনেক ভক্ত, এমনকি অভিনয়শিল্পীরাও রিমেক চান না। 

এক সাক্ষাৎকারে কাজল বলেন, ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে”র মতো সিনেমা রিমেক করা উচিত নয়। “কাভি খুশি কাভি গম”-এর ক্ষেত্রেও কাজলের একই মত। আমি মনে করি, ম্যাজিক একবারই ঘটে। আপনি যদি এটি পুনরায় তৈরি করেন, তবে এতে একই অনুভূতি থাকবে না’

প্রথমবার ২০ অক্টোবর, ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটি এখনো চলছে মুম্বাইয়ের মারাঠা মন্দির সিনেমা হলে। প্রেক্ষাগৃহের প্রধান মনোজ দেশাই বলেন, ‘সাধারণ দিনে কলেজের ছাত্রছাত্রী ও তরুণ দম্পতিরা ভিড় করে। রবিবারে দর্শকের সংখ্যা প্রায় ৫০০, ৩০ বছর পরও।’

৬০ বছর বয়সী এক দর্শক মোহাম্মদ শাকির বলেন, ‘আমি প্রায় ৩০ বার দেখেছি…আরও দেখব। আজও টিকিট কিনলাম।’

ছবির ক্লাইমেক্স—সিমরান দৌড়ে ট্রেনে উঠেই প্রেমিকের কোলে লাফ দেওয়া—দর্শকদের এখনো উচ্ছ্বসিত করে। দেশাই বলেন, ‘এটা সেই মুহূর্ত, যা গায়ে কাঁটা দেয়। যখন বাবা তার মেয়েকে ছেড়ে দেয়, বলে যে সে জীবনের জন্য সেরা সঙ্গী পাবে।’



এদিকে ত্রিশের দশক পেরিয়ে গেলেও নতুন প্রজন্মও মুগ্ধ এই সিনেমায়। ২৩ বছর বয়সী সারাফ বলেন, ‘আমাদের প্রজন্মে অনেক সম্পর্ক নব্বইয়ের দশকের মতো নয়। কিন্তু এই ছবিতে নায়ক সব বাধা পেরিয়ে তার প্রেম জিততে চায়—একেবারেই নিঃস্বার্থ।’ কোনো দর্শকের সঙ্গে সিনেমা হলের প্রধানের ব্যক্তিগত সম্পর্কও তৈরি হয়েছে। মনোজ দেশাই স্মরণ করলেন, ‘এক জুটি ডেটিং করার সময় দেখেছিল। পরে তারা আমাদের নিমন্ত্রণ করে তাদের বিয়েতে। হানিমুনে বিদেশে গেলেও ফিরে এসে ছবিটি দেখেছে।’



ভারতীয় সমালোচক বারাদ্বাজ রঙ্গন মনে করেন, ‘ছবিটি দুই প্রজন্মের সংস্কৃতির যে বিরোধ, সেটা সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে। তাই এটি আজও প্রিয়। এটি একধরনের সাংস্কৃতিক প্রতীক হয়ে গেছে—আমার মনে হয়, চিরকাল চলবে।’

জানা-অজানা
১. এই ছবির নায়ক হিসেবে কিন্তু প্রথমে শাহরুখ খানকে ভাবেননি পরিচালক আদিত্য চোপড়া। নায়ক বানাতে চেয়েছিলেন হলিউড তারকা টম ক্রুজকে।

২. ছবির নাম কী হবে, সে প্রস্তাব দিয়েছিলেন অভিনেত্রী কিরণ খের। ঘাড় ঘুরিয়ে শাহরুখের চাহনির দৃশ্যটির কথা হয়তো অনেকের মনে আছে। এ দৃশ্য ক্লিন্ট ইস্টউডের ‘ইন দ্য লাইন অব ফায়ার’ ছবি থেকে অনুপ্রাণিত।

৩. রাজের চরিত্রটি সাইফ আলী খানকেও অফার করা হয়েছিল। কোনো কারণে সাইফ ছবিটি করতে পারেননি।

৪. শাহরুখ খানের সেই কালো রঙের লেদার জ্যাকেটটি কিনেছিলেন উদয় চোপড়া। ক্যালিফোর্নিয়ায় হার্লে ডেভিডসনের স্টোর থেকে ৪০০ ডলার দামে জ্যাকেটটি কেনেন উদয়।

৫. ‘ডিডিএলজে’র কাহিনি লিখতে মাত্র এক মাস সময় লেগেছিল আদিত্য চোপড়ার। এ ছবিতে শাহরুখ খান নাকি প্রথমে অভিনয় করতেই চাননি। তারপর নাকি অনেক বোঝানোর পর কিং খানকে রাজি করিয়েছিলেন আদিত্য।

৬. ছবির ‘মেহেন্দি লাগা কে রাখনা’ গানটি আজও বিয়েবাড়িতে বাজানো হয়। এ ছবিতে নাকি সরোজ খানের সঙ্গে একাধিকবার মতের অমিল হয়েছিল আদিত্য চোপড়ার। শেষমেশ কোরিওগ্রাফির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ফারাহ খানকে। ‘রুক কা ও দিল দিওয়ানে’ গানটি ফারাহ খানের কোরিওগ্রাফি করা।

৭. ছবিটি ঋষি কাপুর ও মাধুরী দীক্ষিতের ‘ইয়ারানা’ এবং দেব আনন্দ অভিনীত ‘গ্যাংস্টার’ ছবির সঙ্গে ট্রিপল ক্ল্যাশে মুক্তি পায়। তবে সবচেয়ে ব্যবসাসফল হয় ‘ডিডিএলজে’।

৮. যশরাজ ফিল্মসের আগে কখনো এত বড় হিট পায়নি। তাদের আগের বাম্পার হিট ছবি যেমন ‘দাগ’, ‘কাভি কাভি’, ‘ডর’ ভালো আয় করলেও তা এই ছবির চেয়ে কম। সারা ভারতেই ছবিটি হিট ছিল।

৯. অলটাইম ব্লকবাস্টার হওয়া এই ছবি টানা বিরতিহীন ১০০৯ সপ্তাহ চলেছে মারাঠা মন্দিরে। এরপর নেমে গেলে আবারও চালু করা হয়। করোনায় হল বন্ধ হওয়ার আগপর্যন্ত ১২৭৪ সপ্তাহ পার করেছে ছবিটি, যা বিশ্ব সিনেমায় এক অনন্য ইতিহাস।

১০. বলিউডের অন্যতম সেরা গানের অ্যালবাম এই ছবির। ‘ডিডিএলজে’ ও ‘আশিকি’র অ্যালবাম হিন্দি সিনেমার সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া অ্যালবাম।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, বলিউড হাঙ্গামা ও এএফপি





Source link

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post
নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো আসছে, ডিসেম্বরেই চূড়ান্ত সুপারিশ

নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো আসছে, ডিসেম্বরেই চূড়ান্ত সুপারিশ

Next Post
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ মাউশির

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ মাউশির

Advertisement