
দুবাইয়ের এসিসি দপ্তরে ধুলো জমছে এশিয়া কাপের ট্রফিতে। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট দল এখনো সেই ট্রফির দেখা পায়নি। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলেও শিরোপা এখনো হাতে ওঠেনি সূর্যকুমার যাদবদের। এক মাস কেটে গেলেও শেষ হয়নি নাটক। বরং দিন দিন জটিল হচ্ছে ট্রফি হস্তান্তর ঘিরে বিরোধ।
একদিকে ভারতের হুঁশিয়ারি। অন্যদিকে এসিসি সভাপতি ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির কড়া শর্তে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্রিকেট অঙ্গন। বিসিসিআইয়ের চিঠির পর নাকভি জানান, তিনি নিজে ভারতের হাতে ট্রফি তুলে দিতে চান। তবে সেটা ডাকযোগে নয়। ভারতের অধিনায়ক, ক্রিকেটার বা কর্মকর্তাদের দুবাই এসে আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাছ থেকে ট্রফি নিতে হবে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এসিসি সদর দপ্তরে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানে অন্তত একজন ভারতীয় ক্রিকেটার থাকতে হবে, এমন শর্তও জুড়ে দিয়েছেন নাকভি।
ভারত অবশ্য এই প্রস্তাবে রাজি নয়। বিসিসিআই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা নাকভির হাত থেকে ট্রফি নেবে না। কারণ নাকভি শুধু এসিসি ও পিসিবির প্রধানই নন। তিনি পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। ভারতের দাবি, তিনি দুই দেশের রাজনৈতিক সংঘাতের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তাই তার কাছ থেকে ট্রফি নেওয়া অসম্ভব। বিসিসিআইয়ের ই-মেইলে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের অনুরোধ জানানো হয়। বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া বলেছেন, ‘যদি নাকভি জবাব না দেন, তাহলে বিষয়টি আইসিসিতে তোলা হবে।’
এদিকে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম সামা টিভি জানিয়েছে, এসিসি প্রস্তাব করেছে-১০ নভেম্বর দুবাইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়া হবে। নাকভির ইচ্ছা, সেই অনুষ্ঠানে ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ও কর্মকর্তা রাজীব শুক্লা উপস্থিত থাকবেন। ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে, এনডিটিভি ও পিটিআই জানিয়েছে, বিসিসিআই নাকভিকে ই-মেইলে সতর্ক করেছে-ট্রফি না দিলে পরিণতি ভালো হবে না। তবে এসিসি জানিয়েছে, তারা কখনো ট্রফি দিতে অস্বীকৃতি জানায়নি। বরং ভারতই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।
নাকভির ঘনিষ্ঠ সূত্র পিটিআইকে বলেছে, ‘নাকভির অনুমতি ও উপস্থিতি ছাড়া ট্রফিটি কোথাও সরানো যাবে না।’ এদিকে আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডও বিসিসিআইয়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা নাকভিকে চিঠি পাঠিয়ে ট্রফি হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছে। তবে এসিসি সভাপতির অবস্থান অপরিবর্তিত। তিনি চান, তার হাত থেকেই ট্রফি গ্রহণ করুক ভারত। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ২৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ফাইনালে পাকিস্তানকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছিল ভারত। কিন্তু রাজনৈতিক টানাপড়েনে বিজয়ের আনন্দ ছাপিয়ে এখন আলোচনায় কেবল একটি প্রশ্ন-কবে, কোথায়, কার হাত থেকে ট্রফি নেবে ভারত?