
সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে প্রথমবার টেবিল টেনিসের মিশ্র বিভাগে রৌপ্য পদক পেয়েছে বাংলাদেশ। টিটির ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য। এর আগে সাফ অঞ্চল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল টিটি। সেই সীমানা ছাড়িয়ে এশিয়ার মঞ্চ হতে পদক এনেছেন খই খই মারমা ও জাবেদ আহমেদ।
অভূতপূর্ব সাফল্যেও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নজর নেই। সাফল্য পেলে যদি রাষ্ট্র থেকে সাড়া না পাওয়া যায় তাহলে ক্রীড়াবিদরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। খই খই মারমা এবং জাবেদ আহমেদ দেশকে পদক এনে দিয়েও তারা যেন হাসি মুখে নেই। পদক জয় করে নিজে খুশি হয়েছেন, তাদের পরিবার খুশি হয়েছেন এবং ফেডারেশন খুশি হয়েছে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় একবার কথাও বলেনি তাদের সঙ্গে। অথচ এশিয়ান আর্চারিতে স্বর্ণ জিততে না পারা ব্রোঞ্জ, রৌপ্যপদক জয়ীরা পেয়েছেন ১০ লাখ টাকা করে।
সেদিন ফুটবলে এশিয়ান কাপের ম্যাচে ভারতকে হারিয়েছে বাংলাদেশ, তাতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় খুশি হয়ে ২ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অথচ এশিয়ান কাপ হতে লজ্জাজনকভাবে দুই ম্যাচ হাতে রেখে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। তারপরও ২ কোটি টাকা বোনাস পান তারা। অথচ অন্যান্য ডিসিপ্লিনের আন্তর্জাতিক পদক জয় করেও গুরুত্ব পাচ্ছে না, -এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পাচ্ছে না। টিটির খই খই মারমা এবং জাবেদ আহমেদরা চোখে মুখে হাসি থাকলেও বুকে কষ্টের বোঝা।
পদক জয় করে ঢাকায় ফেরা টিটি খেলোয়াড়দের নিয়ে গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে টেবিল টেনিস ফেডারেশন। সেখানে না পাওয়ার আক্ষেপ, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় খেলোয়াড়রা এগিয়ে যেতে না পারার কষ্ট বুকে নিয়ে নানা কথা তুলে ধরলেন খেলোয়াড় এবং ফেডারেশন কর্মকর্তারা। জাবেদ আহমেদ বললেন, ‘আমরা অন্যান্য দেশের ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে কথা বলি। কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন ঘুমাবা, খাবা আর প্র্যাকটিস করবা। আর কোনো কাজ নেই। আর এখানে আমাদেরকে পরিবার নিয়ে চিন্তা করতে হয়।’
খই খই মারমা বলেন, ‘আমাদের আরো খেলাধুলা করার ব্যবস্থা থাকা উচিত। ক্রিকেট ফুটবলের মতো স্পন্সর থাকলে আমরা এগিয়ে যাব।’
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদ সনেটের অনেক পরিকল্পনা। কিন্তু বাস্তবায়নের ক্ষমতা নেই। করতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। অন্যান্য খেলার মতো অত টাকা লাগবে না অনেক কম ব্যয়ে স্বর্ণপদক জয় করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন তিনি। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং বিওএকে লক্ষ্য করে টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনারা ন্যূনতম সুযোগসুবিধা করে দেন। খেলোয়াড়দেরকে যদি ফ্যাসিলিটিজ করে দিতে পারি বড় বড় খেলা থেকে পদক আনতে পারব, স্বর্ণ জয় করতে পারবেন খেলোয়াড়রা।’
তিনি বলেন, ‘ইরান ভারতের ভালো দুই জন কোচ বাংলাদেশে আসতে চায়। আমার যদি সক্ষমতা থাকতো, তাহলে দুজনকে আনতাম আমি। টাকাই নেই কি করে বিদেশি কোচ আনব, একজনকে আনতে চেষ্টা করছি।’ ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে পদক জয়ী খই খই মারমা এবং জাবেদ আহমেদকে ১ লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে ফেডারেশন।