
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ডোপ-অপরাধী ক্রীড়াবিদদের দেশের তালিকায় আবারও শীর্ষে উঠে এসেছে ভারত। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি ডোপিং এজেন্সির (ওয়াডা) প্রকাশিত ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এর আগে ২০২২ এবং ২০২৩ সালেও ডোপিং পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি ‘পজিটিভ’ হয়েছিল ভারতের অ্যাথলেটরা।
ওয়াডার প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে ভারতের ২৬০ ক্রীড়াবিদের শরীরে নিষিদ্ধ শক্তিবর্ধক ওষুধের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশেই ডোপ অপরাধীর সংখ্যা তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছায়নি।
গত বছর ভারতের ন্যাশনাল অ্যান্টি ডোপিং এজেন্সি (নাডা) মোট ৭,১১৩টি প্রস্রাব ও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছিল। যার মধ্যে ৩.৬ শতাংশ পজিটিভ এসেছে। এর বিপরীতে চীন ২৪,২১৪টি পরীক্ষা চালিয়ে মাত্র ৪৩টি পজিটিভ পেয়েছে।
চীন ছাড়াও আরও পাঁচটি দেশ ভারতের চেয়ে বেশিসংখ্যক ক্রীড়াবিদদের পরীক্ষা করেছে। দেশগুলো হচ্ছে জার্মানি (১৫,০৮১টি পরীক্ষায় ৫৪টি পজিটিভ), ফ্রান্স (১১,৭৪৪টি পরীক্ষায় ৯১টি পজিটিভ), রাশিয়া (১০,৫১৪টি পরীক্ষায় ৭৬টি পজিটিভ), ইতালি (৯,৩০৪টি পরীক্ষায় ৮৫টি পজিটিভ) ও যুক্তরাজ্য (৮,২৭৩টি পরীক্ষায় ৩০টি পজিটিভ)।
ভারতের ডোপ অপরাধীর মধ্যে ৭৬ জন ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের খেলোয়াড়, ৪৩ জন ভারোত্তোলনের, কুস্তির ২৯ জন। গত জুলাইয়ে প্যারিস অলিম্পিকের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩ কুস্তি চ্যাম্পিয়ন রিতিকা হুদা ডোপ পরীক্ষায় পজিটিভ হলে তাঁকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুর দিকে ‘খেলো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি গেমস’–এ ডোপিং নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টি আবারও সামনে আসে। সেখানে দেখা যায় যে নারীদের ৪০০ মিটার ও পুরুষদের ৪০০ মিটার হার্ডলসের মতো কিছু ইভেন্টে স্টার্টিং লাইনে মাত্র একজন অ্যাথলেট দাঁড়িয়ে আছেন, কারণ অন্যরা ডোপিং কর্মকর্তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে মাঠ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
নাডার প্রতিবেদন প্রকাশের পর ডোপিংয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাত্রা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত। এক বিবৃতিতে তারা বলছে, ‘ক্রীড়াঙ্গনে ডোপিংয়ের অভিশাপ মোকাবিলা করার জন্য নাডা ইন্ডিয়া শুধু পরীক্ষার সংখ্যাই বাড়ায়নি, শিক্ষা ও সচেতনতার ওপরও গুরুত্বারোপ করেছে।’
নাডা জানিয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বছরে মোট ৭,০৬৮টি পরীক্ষা চালানো হয়েছে, যেখানে পজিটিভ পাওয়া গেছে ১১০টি।