
ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্র জ্যামাইকার দিকে ধেয়ে যাচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হারিকেন মেলিসা। দ্বীপজুড়ে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। ইতোমধ্যেই সেখানে তিনজন মারা গেছেন।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘণ্টায় প্রায় ৩০০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঝড়টি স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালেই দ্বীপটিতে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। এরইমধ্যেই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, শক্তিশালী এই ঝড় বিধ্বংসী ও প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসি জানায়, ঘণ্টায় ১৭৫ মাইল (২৮২ কিলোমিটার) বেগে ধেয়ে আসা মেলিসা এখন সর্বোচ্চ স্তরের ক্যাটাগরি–৫ ঘূর্ণিঝড়। ক্রমেই এর গতি বাড়ছে।
জ্যামাইকার পাশাপাশি হাইতি ও ডোমিনিকান রিপাবলিকেও এই ঝড়ে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, ঝড়টির অগ্রগতি ধীরগতির হওয়ায় দীর্ঘসময় ধরে প্রবল বৃষ্টিপাত হতে পারে। আর এটি মারাত্মক বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়াবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)-এর সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়েছে, বাতাসের গতি ও নিম্নচাপের মাত্রার বিচারে মেলিসা ২০২৫ সালের বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়। বর্তমান গতিবেগ অব্যাহত থাকলে, এটি ১৮৫১ সালে রেকর্ড শুরুর পর থেকে জ্যামাইকার ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হবে বলে জানিয়েছে বিবিসির অংশীদার সিবিএস।
এনএইচসি পরিচালক মাইকেল ব্রেনান সতর্ক করে বলেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে, তাই কেউ যেন ঘরের বাইরে না যায়। ঝড়ের কেন্দ্র অতিক্রমের সময় বাইরে বের হবেন না। খুব দ্রুত গতিতে পুরো দ্বীপ পেরিয়ে যাবে মেলিসা।
সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, আগামী চারদিনে জ্যামাইকায় প্রায় ১০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় জ্যামাইকা সরকার রাজধানী কিংস্টনের কয়েকটি এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডানা মরিস ডিকসন বিবিসিকে বলেন, আমরা এমন ঝড় আগে কখনো দেখিনি। পুরো অক্টোবরজুড়ে বৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে মেলিসার ভারী বৃষ্টি যুক্ত হলে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস হবে।
তিনি জানান, দেশজুড়ে ৮৮১টি আশ্রয়কেন্দ্র সক্রিয় করা হয়েছে এবং সেখানে সবাই বিনামূল্যে থাকতে পারবেন।