
জেন-জিদের পছন্দের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হতে পারে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) আলোচনার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি সূত্র বার্তা রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছে।
অভিজাতদের বিরুধে দুর্নীতিবিরোধী তীব্র বিক্ষোভের ফলে কেপি শর্মা অলি পদত্যাগের পর দেশটি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহের এই বিক্ষোভে ৫১ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে এই সহিংসতা শুরু হয়েছিল। যদিও এটি এখন প্রত্যাহার করা হয়েছে। অলির পদত্যাগের পর সহিংসতা কমতে থাকে।
প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল এবং সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেলের পরামর্শে গঠিত গ্রুপের একজন সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘তারা (জেন-জি) তাকে চায়। আজই এটি হবে।’
নেপালের প্রথম এবং একমাত্র নারী প্রধান বিচারপতি ৭৩ বছর বয়সী কার্কি সততা, নিষ্ঠা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানের জন্য পরিচিত।
আলোচনার সঙ্গে যুক্ত জেন-জির একটি সূত্র জানিয়েছে, পাউডেলের বাসভবনে একটি বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিকভাবে তার নিয়োগের কথা রয়েছে।
এই বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধের জবাব দেয়নি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এবং সেনাবাহিনীর মুখপাত্র।
ভারত ও চীনের মাঝামাঝি অবস্থিত নেপাল ২০০৮ সালে রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির পর থেকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার সাথে লড়াই করছে। অন্যদিকে কর্মসংস্থানের অভাব লাখ লাখ মানুষকে অন্য দেশে কাজ খুঁজতে এবং দেশে টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এদিকে, শুক্রবার থেকে দোকানপাট আবার খোলা শুরু হয়েছে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। রাস্তায় গাড়ি চলছে এবং পুলিশ সদস্যরা বন্দুকের পরিবর্তে লাঠি হাতে তুলে নিয়েছে।
কিছু রাস্তা অবরুদ্ধ ছিল। রাস্তায় আগের তুলনায় কম সৈন্য টহল দিচ্ছিল। কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভে নিহত প্রিয়জনদের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর শুরু করেছে।
কাঠমান্ডুর টিচিং হাসপাতালে মৃতদেহ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে করতে করুণা বুধাথোকি তার ২৩ বছর বয়সী ভাগ্নে সম্পর্কে বলেন, ‘তার বন্ধুরা (বিক্ষোভ থেকে) পিছু হটলেও সে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এরপর আমাদের বলা হয়, তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।’
পুলিশের মুখপাত্র বিনোদ ঘিমিরে বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে বলেন, নিহত ৫১ জনের মধ্যে ২১ জন বিক্ষোভকারী, ৯ জন বন্দী, তিন জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং ১৮ জন অন্যান্য।
নিহত আরেক প্রতিবাদকারী ২৪ বছর বয়সী আশাব আলম ঠাকুরাই মাত্র এক মাস আগে বিয়ে করেছিলেন। তার চাচা জুলফিকার আলম বলেন, ‘আমরা যখন তার সঙ্গে শেষবার কথা বলেছিলাম… সে বলেছিল, বিক্ষোভের আটকে আছে। এরপর আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি… অবশেষে আমরা তাকে মর্গে খুঁজে পাই।’