
কয়েকদিন আগে তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশন (টিএফএফ) বিশ্ব ফুটবলে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে, যখন প্রকাশ করা হয় যে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রেফারি ও সহকারী রেফারিরা স্বয়ং বেটিং বা বাজিতে জড়িত ছিলেন। টিএফএফ জানিয়েছে, তুরস্কে মোট ৫৭১ জন রেফারির মধ্যে ৩৭১ জনের অন্তত একটি বেটিং অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সরাসরি বাজিতে অংশ নেওয়ার অভিযোগে ১৪৯ রেফারি ও সহকারী রেফারিকে বহিষ্কার করা হয়েছে, আর তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
টিএফএফ প্রফেশনাল ফুটবল ডিসিপ্লিনারি বোর্ড শুক্রবার জানিয়েছে, এই ১৪৯ জন অফিসিয়ালের বিরুদ্ধে ৮ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়েছে। এর আগে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ১৫২ জন রেফারি সক্রিয়ভাবে ফুটবলের ওপর বাজি খেলেছেন। এদের মধ্যে সাতজন শীর্ষ পর্যায়ের রেফারি এবং ১৫ জন শীর্ষ পর্যায়ের সহকারী রেফারি আছেন।
টিএফএফ সভাপতি ইব্রাহিম হাজিওসমানোগলু বলেন, ‘তুর্কি ফুটবলের খ্যাতি মাঠের কঠোর পরিশ্রম ও ন্যায়বিচারের অটল সততার ওপর নির্ভর করে। যে কোনো ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা এটি ভঙ্গ করে, যা কেবল নিয়ম লঙ্ঘন নয়, আস্থা লঙ্ঘনের সমান। ফুটবলের পবিত্র সীমানা কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য খেলার মাঠ নয়। যে কেউ এই সম্মান কলঙ্কিত করবে, সে তুর্কি ফুটবলে আর কখনও অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আরও জানান, ১০ জন রেফারি গত পাঁচ বছরে প্রতিজন ১০,০০০টির বেশি ম্যাচে বাজি রেখেছেন। কেউ কেউ মাত্র একটি বাজি রেখেছেন, আর একজন ১৮,২৭৭টি ম্যাচে বাজি রেখেছেন। তবে এখনও জানা যায়নি তারা তাদের পরিচালিত ম্যাচে জুয়া খেলেছেন কিনা বা কোনো ফলাফলে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন কিনা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হাবেরতুর্ক জানিয়েছে, ক্লাব ও খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে। প্রায় ৩,৭০০ জন খেলোয়াড়কে এ বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ইস্তানবুল চিফ পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিস এপ্রিল থেকে ম্যাচ ফিক্সিং সন্দেহে ফুটবল অফিসিয়ালদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে। টিএফএফ এই তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করবে।
তুরস্ক সুপার লিগ এখনও স্বাভাবিকভাবে চলছে। হাজিওসমানোগলু শীর্ষ পর্যায়ের রেফারিদের প্রতি সমর্থন কামনা করেছেন, যারা ‘সম্মানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ন্যায়বিচার উপস্থাপন করেন।’