
গোটা পৃথিবীতে যে কোনো ওষুধ কিনতে গেলে প্রেসক্রিপশনের দারকার হয়। সহজে কোথাও ওষুধ কেনা যায় না। জাপানে ওষুধ কিনতে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। জাপানিরা কঠিন নিয়ম অনুসরণ করেন। গেলেই ওষুধ দিয়ে দেবে না। ডাক্তার লিখে দিয়েছে কি না। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুসারে ওষুধ দেবে।
কিন্তু ওষুধ ক্রেতাকে প্রেসক্রিপশন ফেরত দেবে না। এ নিয়ে ফার্মেসিতে ভুল বোঝাবুঝিতে ৩০ মিনিট শেষ। ফার্মাসিস্ট আর ওষুধ ক্রেতার মধ্যে সমাধান করতে এগিয়ে আসেন তৃতীয় পক্ষ। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়, মূল প্রেসক্রিপশন ফার্মেসিতে জমা দিতেই হবে, আর ফটোকপি দেওয়া হবে ক্রেতাকে। ফার্মেসি থেকে ক্রেতার হাতে দেওয়া হয়েছে ফটোকপি, তার ওপরে লাল রঙের কালিতে বড় বড় করে লিখে দেওয়া হয়েছে ফটোকপি শব্দটি।
যুক্তরাষ্ট্র কিংবা কানাডাতেও ওষুধ কেনার একই নিয়ম, তবে ওখানে কিছু ওষুধ সহজে কেনা গেলেও জাপানে কঠিন। বিশেষ করে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ কিনতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। ফার্মেসিতে দেখাতে হবে কোন ধরনের গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ কিনতে এসেছেন। ওষুধ নির্ধারণের পর ফার্মেসি থেকে একটা এফোর সাইজের নোটিশ ক্রেতার সামনে ধরা হয়। সেখানে উল্লেখিত অন্তত পাঁচটি প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে হবে।
১. এই ওষুধ কেন খাবেন। ২. এই ওষুধ আগে খেয়েছেন কি না। ৩. এই ওষুধ খেয়ে কোনো সমস্যা হয়েছিল কি না। ৪. আপনার সমস্যা কত দিনের। ৫. এই ওষুধটি খেয়ে সুস্থবোধ করছেন কি না। ওষুধটির মান কেমন, ওষুধটি খাওয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল কি না। এমন সব প্রশ্ন ছিল। সবকটির উত্তর যদি সঠিক না হয় তাহলে ওষুধ দেবে না। আর সঠিক হলে তখন আপনাকে ছয়টি ট্যাবলেটের এক বক্স ওষুধ দেবে।
ভাইবা পরীক্ষা দেওয়ার মতো সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার পরও ওষুধ ৬টাই থাকবে। এক বক্সের বেশি ওষুধ দেবে না। দ্বিতীয় বক্স ওষুধ কিনতে হলে অন্য ফার্মেসিতে যেতে হবে। সেখানেও একই নিয়ম। অন্য এলাকায় গেলেও সেসব ফার্মেসিতেও একই নিয়ম। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ কিনতে ইন্টারভিউ দিতে হবে। ৬টা ট্যাবলেটের মূল বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার টাকা।
এখানেই শেষ নয়, ডায়াবেটিস মাপার মেশিন কিনতে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন চাওয়া হয়। একজন জাপানি তরুণের বাবা ডাক্তার। বাবার সঙ্গে কথা বলে সেই তরুণ জানিয়েছেন ডাক্তার রোগী দেখবেন। ডায়াবেটিস রয়েছে কি না। রোগীকে রক্তের শর্করা জানতে মেশিন প্রয়োজন রয়েছে কি না। ডাক্তার প্রেসক্রিপশন দিলে দোকানি এক সপ্তাহ পর মেশিন দেবে।