
রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে একের পর এক লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে চলেছেন দক্ষিণী সুপারস্টার অভিনেতা থালাপতি বিজয়। কড়া সমালোচনার মাধ্যমে বিরোধী দলের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। অন্যদিকে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে তার রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেত্রি কাজাগাম (টিভিকে) এর সমাবেশ ঘিরে স্বজন হারানোর চিৎকারে আকাশ বাতাস ভরে উঠেছে। সমাবেশে পদদলিত হয়ে ৪০ জনের নিহত হওয়ার ঘটনায় শোকে মুষড়ে পড়ে খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া থালাপতি বিজয়।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তামিলনাড়ুর কারুর জেলায় থালাপতি বিজয়ের সমাবেশে বিপুল লোকসমাগম হয়। একপর্যায়ে অতিরিক্ত গরম ও হুড়োহুড়িতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এতে পদদলিত হয়ে অন্তত ৪০ জন মারা যান। নিহতদের মধ্যে ১০ জন শিশু এবং ১৭ জন নারী রয়েছেন। কর্মকর্তাদের বরাতে জানা যায়, আহত হয়েছেন প্রায় ১০০ জন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
টিভিকের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় শোকে মুষড়ে পড়েছেন বিজয় থালাপতি। তিনি এতটাই মুষড়ে পড়েছেন যে ওই ঘটনার পর থেকে কিছুই খাননি।
দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকে ২০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিজয়। পাশাপাশি আহত প্রায় ১০০ জনের প্রত্যেককে ২ লাখ রুপি দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
জনসভায় পদদলিত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় মামলা করেছে ভারতীয় পুলিশ। এতে টিভিকের দুই শীর্ষস্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। সূত্র জানায়, এ ঘটনায় সিবিআই অথবা আদালতের তত্ত্বাবধানে স্বাধীন তদন্ত চায় টিভিকে। আজ (সোমবার) আদালতে শুনানি। এরপর বিজয়ের সঙ্গে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর দেখা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ওই সূত্র আরও জানায়, ঘটনার পর বিজয়কে অবিলম্বে কারুর ছেড়ে যেতে মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরপর তিনি ঘটনাস্থল ছেড়ে চেন্নাই চলে যান।
ইস্ট কোস্ট রোড (ইসিআর)-সংলগ্ন নীলঙ্কারাইয়ে বিজয়ের বাসভবনে বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এরপর সোমবার সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে চেন্নাই পুলিশ। হুমকি পেয়ে নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেন। ডগস্কোয়াড ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল বাসভবন প্রাঙ্গণে ব্যাপক তল্লাশি চালায়।
সূত্র আরও জানায়, সম্ভাব্য কোনো হুমকি নেই জানার পর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বাসভবনের প্রতিটি অংশ সাবধানতার সঙ্গে পরিদর্শন করেছেন।
এর আগে হতাহতের ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে টিভিকের দেওয়া এক পোস্টে ৫১ বছর বয়সী বিজয় মৃত ও আহত ব্যক্তিদের জন্য গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। এই অসহনীয় যন্ত্রণার কথা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। করুরে প্রাণ হারানো আমার প্রিয় ভাই-বোনদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’