
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টিতে এসে প্রথম ম্যাচে হোঁচট খেয়েছে লিটন-হৃদয়-জাকেররা। দলের প্রথম চার ব্যাটারদের মধ্যে কেউই ছুঁতে পারেনি দুই অঙ্কের সংখ্যা। সফরকারীদের কাছে হেরেছে ৩৯ রানে। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আজ সাগরিকায় মাঠে নামবে দুই দল। সিরিজ জয় করতে হলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে।
প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে চার উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ১৮১ রান তুলেছিল আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের বিপক্ষে যা আইরিশদের দলগত সর্বোচ্চ রান। ১৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আবারও সেই টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল বাংলাদেশ। যদিও স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮৩ রানের ইনিংস খেলে তাওহীদ হৃদয়।
তবে বরাবরের মতো হৃদয়ের ইনিংস কোনো কাজেই আসল না। দলের পারফরম্যান্স নিয়ে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই টাইগার ব্যাটার জানিয়েছেন, যত খুশি সমালোচনা করতে পারেন সাংবাদিকরা। হৃদয় বলেন, ‘আপনি আপনার জায়গা থেকে সমালোচনা করবেন এটা স্বাভাবিক। এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। আপনারা চাইলে সমালোচনা করতেই পারেন। যত ইচ্ছা সমালোচনা করেন, আপনাদের অধিকার আছে এবং আপনারা করেন। এখান থেকে ২-১টা ইতিবাচক জিনিসও হতে পারে। আমি চাই আপনারা করেন, এখান থেকেও হয়তো ভালো কিছু হতেও পারে। আমি অনুরোধ করব, আপনারা যুক্তি দিয়ে সমালোচনা করেন। এখান থেকে কিছু ভালো দিক হতেও পারে।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে মাঠে নামার আগে ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের কাছে হার দলের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ কি না, এই বিষয়ে হৃদয়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে তা মানতে রাজি নন তিনি। বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় না। এমন না যে আমরা করতে পারিনি। আমরা ২০০ রানও করেছি। ২০০ রান করেও হয়তো আমরা সেই ম্যাচটা হেরেছি। চিন্তাভাবনা যদি আমরা ঠিকভাবে করতে পারি, প্ল্যান অনুযায়ী ডেলিভার করতে পারি আমার মনে হয় না এটা ইস্যু হবে। এমন না যে ১৮০ টার্গেট আগে করিনি। আশা করছি এখান থেকে আমরা কামব্যাক করতে পারব।’
যদিও ঘরের মাঠে সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে এই সাগরিকায় ধবলধোলাই হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে ম্যাচে প্রতিপক্ষ আগে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে ১৭৫ থেকে ১৮০ রানের বেশি করে, সেই ম্যাচে ব্যাটাররা যেন নিজেদের খেই হারিয়ে ফেলে। বল লক্ষ্য তাড়া করা যেন এখনো শিখতে পারেনি।
প্রথম ম্যাচের পর অধিনায়ক লিটন বোলারদের কাঠগড়ায় দাঁড় করেছিলেন। তার মতে, বোলাররা ২০-২৫ রান বেশি দিয়েছে। এই নিয়ে লিটন বলেন, ‘আমাদের বোলাররা দারুণ কাজ করেছে। বিশেষ করে ফিজ, সে যেমন করে। তবু আমরা যদি আরেকটু ভালো বল করতে পারতাম, তাদের যদি আরও ২০-২৫ কম রানে আটকাতে পারতাম। কারণ উইকেটে বোলারদের জন্য সাহায্য ছিল।’
যদিও ব্যাটারদের জন্য চট্টগ্রামের উইকেট সবসময় প্রিয়। এই উইকেটে বল অপ্রত্যাশিত আচরণ করে না। আয়ারল্যান্ড ব্যাটাররাও স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট চালিয়েছে। তবে স্বাগতিক ব্যাটারদের ঘরের মাঠের উইকেট হয়েও তাদের ব্যাটিং দেখে মতে হয়েছে এই চিরচেনা উইকেট যেন তাদের বড্ড অচেনা। আজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে পারে কি না লিটন বাহিনী নাকি প্রথমবারের মতো আইরিশদের বিপক্ষে সিরিজ হারের লজ্জায় পড়বে স্বাগতিকরা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।