
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বাদশ আসরের পর্দা ওঠার মাত্র এক দিন আগে এক নজিরবিহীন ও অনাকাঙ্ক্ষিত সংকটের মুখে পড়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। টুর্নামেন্ট শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে চট্টগ্রাম রয়্যালসের মালিকপক্ষ কাইয়ুম রশিদ এক চিঠির মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানিয়ে দিয়েছেন, তারা আর দলের মালিকানা ধরে রাখতে পারছেন না।
চিঠিতে চরম আর্থিক সংকটের কারণ দেখিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সব দায়িত্ব বিসিবিকে গ্রহণ করার অনুরোধ জানানো হয়। এই জরুরি পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কর্মকর্তারা দলের সিনিয়র খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন এবং আলোচনার ভিত্তিতে চট্টগ্রাম রয়্যালসের সম্পূর্ণ মালিকানা ও পরিচালনার দায়িত্ব বিসিবি নিজ কাঁধে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিসিবির এই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে চট্টগ্রাম রয়্যালসের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে বলে জানা গেছে। মালিকপক্ষের আর্থিক অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি কঠোর সমালোচনার মুখে ছিল। এমনকি পারিশ্রমিক ও ব্যাংক গ্যারান্টি সংক্রান্ত জটিলতায় বিদেশি ক্রিকেটারদের আসা নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল।
এখন থেকে বিসিবি সরাসরি দলটির তদারকি করবে এবং ইতোমধ্যে স্কোয়াডের ঘাটতি পূরণে নতুন বিদেশি ক্রিকেটার সংগ্রহের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কোচিং স্টাফের একজন সদস্য এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, টুর্নামেন্টের মান বজায় রাখতে বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের এবারের আসর শুরু হতে যাচ্ছে। বিপিএলের উদ্বোধনী দিনেই সন্ধ্যা ৭টায় নোয়াখালী এক্সপ্রেসের বিপক্ষে মাঠে নামার কথা রয়েছে চট্টগ্রাম রয়্যালসের। তবে মাঠের লড়াই শুরুর আগে দলটির প্রস্তুতি এখনো অগোছালো অবস্থায় রয়েছে।
দলটির জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা ছিল টুর্নামেন্ট শুরুর মাত্র দুই দিন আগে তিন বিদেশি তারকা আবরার আহমেদ, পল স্টার্লিং ও নিরোশান ডিকভেলার নাম প্রত্যাহার। এর ওপর দক্ষিণ আফ্রিকান প্রধান কোচ জাস্টিন মাইলসের যোগ দেওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা কাটেনি এবং খেলোয়াড়রা এখনো প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম হাতে পাননি।
চট্টগ্রাম রয়্যালস শুরু থেকেই নানা কারণে আলোচনায় ছিল, বিশেষ করে নিলামে ১ কোটি ১০ লাখ টাকার রেকর্ড মূল্যে নাঈম শেখকে দলে ভিড়িয়ে তারা চমক সৃষ্টি করেছিল। তবে নেপথ্যে আর্থিক ভিত্তি যে নড়বড়ে ছিল, তা এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নিয়ম অনুযায়ী টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ক্রিকেটারদের ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক পরিশোধের কথা থাকলেও ফ্র্যাঞ্চাইজিটি তা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এর আগে বিসিবি জানিয়েছিল যে চট্টগ্রাম রয়্যালস তাদের সকল পাওনা ও ব্যাংক গ্যারান্টি পরিশোধ করেছে, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি সেই দাবির বিপরীতে এক বড় প্রশ্নচিহ্ন একে দিয়েছে। বিসিবি এখন সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দলটিকে মাঠে নামানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে।