
যতক্ষণ না নিহত সব ইসরায়েলি বন্দির দেহ দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শেষ হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামির। ২০২৬ সালে প্রবেশের আগে সামরিক বাহিনীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও অভিজ্ঞতা মূল্যায়নের অংশ হিসেবে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের সামরিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) আয়োজিত ওই সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল থেকে শুরু করে সব অপারেশনাল ইউনিট কমান্ডার উপস্থিত ছিলেন। আইডিএফ জানিয়েছে, এই সম্মেলন সামরিক বাহিনীর জন্য একটি নতুন ‘শিক্ষণ প্রক্রিয়ার সূচনা’, যেখানে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগাম প্রস্তুতির দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে রিজার্ভ বাহিনীর কমান্ডারদের নিয়েও একই ধরনের সভা অনুষ্ঠিত হবে।
জেনারেল জামির বলেন, ‘আইডিএফ ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে, তবে অতীতকে কাঁধে নিয়ে। শিক্ষা নেওয়া এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করা আমাদের নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্ব—এ কাজ আমরা সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের দায়িত্ব হলো আমাদের সৈন্যদের ও তাদের পরিবারের যত্ন নেওয়া, সংগঠনগত শৃঙ্খলা ও প্রস্তুতি আরও দৃঢ় করা, এবং সব সীমান্তে যে নতুন চ্যালেঞ্জগুলো সামনে আসছে, সেগুলোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।’
জামির স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ‘যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। নিহত বন্দিদের দেহ ফিরিয়ে আনার এই পবিত্র মিশন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অভিযান চলবে, এবং হামাসের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।’
সম্মেলনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যুদ্ধসংক্রান্ত অপারেশনাল ও গোয়েন্দা তথ্য উপস্থাপন করেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজও উপস্থিত কমান্ডারদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে এক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিপ্রাপ্ত দুই বন্দি এমিলি দামারি ও লিরি আলবাগ, নিহত সৈনিক তাল হাইমির স্ত্রী এলা হাইমি, এবং রাব্বি দোরন পেরেজ—যিনি নিহত ক্যাপ্টেন ড্যানিয়েল পেরেজের বাবা।
তাল হাইমি ও ড্যানিয়েল পেরেজ দুজনই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর নিহত হয়েছিলেন। তাদের দেহ হামাস গাজায় নিয়ে গিয়েছিল এবং এই মাসের শুরুতে আইডিএফ তা উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনে।
আইডিএফের এই সম্মেলন মূলত গাজা যুদ্ধের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ, ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণ এবং সৈন্যদের মানসিক ও কাঠামোগত প্রস্তুতি জোরদার করার এক পর্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।