
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের গাজায় দুই বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধকে ‘আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা ও ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করেছেন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের প্রাণঘাতী হামলার বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
নেতানিয়াহু আরও দাবি করেন, ইসরায়েল ‘মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিয়েছে’ এবং সেই সঙ্গে এ অঞ্চলে ইরানের জোটবদ্ধ শক্তিগুলোকে রুখে দিয়েছে।
নেতানিয়াহু ইসরায়েলের নাগরিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দুর্ভাগ্যজনক দিনে আছি।’ তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জনে কাজ চালিয়ে যাবে, যার মধ্যে রয়েছে, সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনা, হামাসের শাসনের অবসান ঘটানো এবং গাজা যাতে আর ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হয়, তা নিশ্চিত করা।
বিবৃতিতে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনার কথা সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি এবং ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকা থেকে পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়া হবে কি না, সেই বিষয়েও কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকেই ইসরায়েল গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় কমপক্ষে ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯ জন শিশু। একই সময়ে আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি গাজা অবরোধ করে সেখানে খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো জরুরি পণ্য প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এ কারণে দুই বছরে অনাহারে উপত্যকাটিতে ৪৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৫৪টিই শিশু। গাজার পাঁচ বছরের কম বয়সী ৫১ হাজার ১০০টির বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, গাজার ৩৮টি হাসপাতালের ২৫টিই ধ্বংস করেছে ইসরায়েল এবং ৯২ শতাংশ আবাসিক ভবন ধ্বংস করা হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা