
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর আগ্রাসনের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে। এই দুই বছরে ইসরায়েলি হামলায় পুরো গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া ত্রাণের অভাবে গাজার বাসিন্দারা বর্তমানে ভয়াবহ ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) পর্যন্ত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের অতর্কিত হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় তীব্র আক্রমণ শুরু করে, যা হামাস নির্মূলের নামে দুই বছর ধরে চলছে।
এই যুদ্ধ নিয়ে চাথাম হাউসের রাজনৈতিক বিশ্লেষক সানাম ভাকিল বলেছেন, ‘দুই বছর ধরে গাজায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে আসছে ইসরায়েল। যদিও তারা সেখানে কী অর্জন করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’ তবে তার মতে, কিছু ক্ষেত্রে ইরান-সমর্থিত প্রতিরোধ নেটওয়ার্কের সক্ষমতাও কমেছে।
অন্যদিকে, তেল আবিব এখন কয়েক দশকের তুলনায় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিকভাবে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগ করে আসছে, যার প্রমাণ গেল ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনেও পাওয়া গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সানাম ভাকিলের মতে, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যার চূড়ান্ত রূপ প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইডিএফ বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করেছে এবং সেখানে এমন পরিকল্পিত জীবনধারা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে যা তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকির সৃষ্টি করেছে।
তিনি আরও দাবি করেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ওপর জাতিগত নিধনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আইডিএফের ক্রমাগত হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় এক লাখ সত্তর হাজার।
ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার কারণে ইসরায়েল ইরান, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন এবং কাতারসহ অন্যান্য অঞ্চলেও হামলা চালিয়েছে। তা সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নানা সময়ে আলোচনা হলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
সূত্র: আনালোদু এজেন্সি