
খাগড়াছড়িতে মারমা এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ও পরবর্তী বিক্ষোভে সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে দেশের ৪১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা এসব দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত তিনজন নিহত এবং ৩০ জন আদিবাসী আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর “মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ” নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নাগরিকরা একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “কোনো বাহিনীই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কারও বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ থাকলে তাকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। দায়মুক্তির সংস্কৃতি এখনই বন্ধ করা প্রয়োজন।”
নাগরিকদের উত্থাপিত ৯ দফা দাবি:
১. মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. সংঘর্ষে সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।
৩. সহিংসতায় জড়িত যেকোনো বাহিনীর সদস্যকে আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. নিহত ও আহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. পাহাড়ে দীর্ঘদিনের সামরিকীকরণ নীতির পর্যালোচনা করে রাজনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।
৬. পাহাড়ে বসবাসরত সব নাগরিকের নিরাপত্তা ও সম্প্রীতির সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
৭. আদিবাসী জনগণের বিরুদ্ধে যেন কোনো কাঠামোগত নিপীড়ন, হয়রানি বা বেআইনি গ্রেপ্তার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. পাহাড়ে অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে জনগণ সত্য জানতে পারে এবং ভুক্তভোগীদের কণ্ঠস্বর দমন না হয়।
৯. নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিকার ও জবাবদিহি নিশ্চিতে স্বাধীন তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি খাগড়াছড়ির এক পাহাড়ি (মারমা) কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও অবরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণহানি ঘটে, যা নিয়ে দেশব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।