
যেকোনো বিষয়ে সফল হতে চাইলে প্রয়োজন লক্ষ্য নির্ধারণ। এরপর প্রয়োজন হয় পরিশ্রম ও অধ্যবসায়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই নানাবিধ চিন্তা, দ্বিধা আর সংশয় আমাদের লক্ষ্য পুরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এমন অনেক কিছুই আছে-যা আমরা কিছুটা চেষ্টা করলেই উতরে যেতে পারি, কিন্তু দ্বিধা ও সংশয়ের কারণে সহজ কাজটি কঠিন হয়ে ওঠে।
এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে মেডিটেশন বা মনের ব্যায়াম, যা আমাদের চিন্তাকে স্বচ্ছ করে, মনকে স্থির রাখে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
এখনকার কর্মব্যস্ত জীবনে নানামুখী চাপ ও প্রতিযোগিতার ভেতর আমরা অনেকসময় মানসিক শান্তি হারিয়ে ফেলি। এ অবস্থায় যেকোনো কাজ হয়ে ওঠে অনেক বেশি চ্যালঞ্জিং। ভালো ক্যারিয়ার গড়তে মেডিটেশনের চর্চা হতে পারে অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি, যা মনে প্রশান্তি ফিরিয়ে আনে।
আমাদের মস্তিষ্কে চিন্তার বিভিন্ন স্তর আছে। মেডিটেশনের মাধ্যমে নীরবে বসে সুনির্দিষ্ট অনুশীলন করে মনোযোগ বাড়ানো যায়, মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায়। যা পেশাজীবন, শিক্ষাজীবন বা কর্মজীবনে যেকোনো কাঙ্ক্ষিত অর্জনের দিকে এগোতে সাহায্য করে।
মেডিটেশন কেন দরকার
মেডিটেশন মানে মনোসংযোগের অনুশীলন। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানুষ নিজের চিন্তা, অনুভূতি ও মনোযোগকে নিয়ন্ত্রণে আনতে শেখে।ক্যারিয়ারের প্রতিযোগিতামূলক জগতে প্রতিদিনই নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। অনেকসময়ই মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভুল হয়, সৃজনশীলতা কমে যায়। মেডিটেশনের মাধ্যমে মনকে প্রশিক্ষিত করা যায় শান্ত থাকতে, স্পষ্টভাবে চিন্তা করতে এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে। এতে কাজে নিয়ন্ত্রণ বাড়ে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয় এবং আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়।
মেডিটেশনের প্রভাব
মেডিটেশন ক্যারিয়ার গ্রোথেও সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। নিচে কিছু দিক তুলে ধরা হলো-মনোযোগ বৃদ্ধি: নিয়মিত মেডিটেশন করলে কাজে মনোযোগ
বাড়ে। স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট অফিস বা পড়াশোনার চাপ সহজে সামলানো যায়।
ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স: আবেগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাড়ে, ফলে টিমওয়ার্ক ও লিডারশিপ দক্ষতা বাড়ে।
সৃজনশীল চিন্তা: মন শস্ত থাকলে নতুন ধারণা ও সমাধান বের করা সহজ হয়।
স্বচ্ছ সিদ্ধান্তগ্রহণ: মেডিটেশন নিজের অগ্রাধিকার ও লক্ষ্য বুঝতে সাহায্য করে।
মেডিটেশনের পদ্ধতি ও প্রশিক্ষণ
মেডিটেশন শেখার জন্য এখন অনেক ধরনের প্রশিক্ষণ পাওয়া যায়। বাংলাদেশে সিলভা মেথড এবং কোয়ান্টাম মেথড বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
সিলভা মেথড: যুক্তরাষ্ট্রের জোসে সিলভা উদ্ভাবিত এই পদ্ধতিতে মনোযোগ, ইতিবাচক চিন্তা ও মানসিক শক্তি বাড়ানোর কৌশল শেখানো হয়। দেশে এর শাখা রয়েছে। কোয়ান্টাম মেথড বাংলাদেশে শহীদ আল বুখারি প্রবর্তিত এই পদ্ধতিতে মেডিটেশনের মাধ্যমে আত্মউন্নয়ন, মানসিক প্রশান্তি ও লক্ষ্য অর্জনের দীক্ষা দেওয়া হয়।
এগুলোর মূল উদ্দেশ্য একটাই-মানুষ যেন নিজের ভেতরের শক্তিকে চিনতে পারে, মনোসংযোগ বাড়ায় এবং দৈনন্দিন কাজের ভারসাম্য রক্ষা করার মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করে।
কীভাবে শুরু করবেন
সিলভা বা কোয়ান্টামের প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। এরপর মেডিটেশন করতে কোনো বিশেষ জায়গা বা সময় লাগবে না। প্রতিদিন সকালে বা ঘুমানোর আগে ১০-১৫ মিনিটের চর্চা করলেই নিজের ভেতর ইতিবাচক পরিবর্তন অনুভব করবেন। এখন অনলাইনেও বিনামূল্যে মেডিটেশন সেশন পাওয়া যায়, তবে সরাসরি প্রশিক্ষণ কোর্স করলে ফলাফল ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	