
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে এক সুনির্দিষ্ট ড্রোন হামলায় তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) প্রধান নূর ওয়ালি মেহসুদের নিহতের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। যদিও তার মৃত্যুর বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি, তবে একাধিক সূত্রের দাবি, এই হামলায় তার গাড়ি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) একই হামলায় তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি সাইফুল্লাহ মেহসুদ এবং খালিদ মেহসুদেরও প্রাণহানি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঘটনা টিটিপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে চলমান তীব্র অভিযানের মধ্যেই ঘটল, তবে এই হামলার ফলে সশস্ত্র সংগঠনটির নেতৃত্ব কাঠামোতে কী ধরনের পরিবর্তন আসবে, তা এখনো অনিশ্চিত। বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, টিটিপি এই হামলার প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারে।
একই সময়ে কাবুলের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা-৮ এ দুটি প্রবল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে এবং আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্টে, যার সত্যতা যাচাই করা যায়নি, বলা হচ্ছে যে আকাশে যুদ্ধবিমান দেখা গেছে, যা আরও হামলার আশঙ্কা উসকে দিয়েছে। আফগান রাজধানীর এই লক্ষ্যভেদী বিমান হামলা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে অন্যতম সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা পাকিস্তানের সীমান্তপাড়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও তীব্র হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আফগানিস্তানের ইসলামিক এমিরেট (আইইএ) এর মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বিস্ফোরণের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও নাগরিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে, এখন পর্যন্ত কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র (ডিজি আইএসপিআর) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরি আজ শুক্রবার পেশোয়ার কোর হেডকোয়ার্টারে একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন, যেখানে এই উচ্চঝুঁকিপূর্ণ অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
তবে কয়েকজন দাবি করেছেন যে কাবুল ও আশপাশের একাধিক স্থানে বিমান হামলা চালানো হয়েছে, এই তথ্য সত্য হলে পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। তালেবান সরকার এখনও বিস্ফোরণের প্রকৃতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি, তবে স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে বলেছে।
সূত্র: পাকিস্তান অবজারভার