
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ভেনেজুয়েলার সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী কয়েকদিন বা এমনকি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালানো হতে পারে।
সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদপত্র মিয়ামি হেরাল্ড।
প্রতিবেদন অনুসারে, পরিকল্পিত হামলাগুলো ‘কার্টেল দে লস সোলস’-এর ব্যবহৃত সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে করা হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মতে, এই কার্টেলের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নেতৃত্বে রয়েছে।
সূত্র সংবাদপত্রটিকে জানিয়েছে, মার্কিন আক্রমণগুলোর লক্ষ্য হবে ‘কার্টেলের শ্রেণিবিন্যাসকে ধ্বংস করা’।
এর আগে মার্কিন প্রতিনিধি রাশিদা ত্লাইব বলেছিলেন, মাদুরোকে উৎখাত করার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধ শুরু করার পরিকল্পনা করছেন।
ট্রাম্প বলেছেন, ওয়াশিংটন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে ‘অবৈধ পদার্থ’ পাচারের জন্য দায়ী মাদক কার্টেলের সদস্যদের নির্মূল করতে চায়।
ভেনেজুয়েলার নেতা নিকোলাস মাদুরো বারবার বলেছেন, তার দেশ ১০০ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের সবচেয়ে গুরুতর হুমকির মুখোমুখি।
ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালান রোধে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ করেছে।
ইতোমধ্যেই মার্কিন নৌবাহিনী ক্যারিবিয়ান সাগরে আটটি জাহাজ, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন এবং ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। সেই সঙ্গে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আন্তর্জাতিক জলসীমায় কমপক্ষে নয়টি স্পিডবোট ধ্বংস করা হয়েছে করেছে। অভিযোগ করা হয়েছে, নৌকাগুলোয় ভেনেজুয়েলা থেকে মাদক চোরাচালানের লোক ছিল।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রকে ক্যারিবিয়ান এবং পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তথাকথিত মাদক পাচারকারীদের জাহাজের ওপর হামলা বন্ধ করার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
আজ শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, এই মানুষদের ‘এমন পরিস্থিতিতে হত্যা করা হয়েছে, যার কোনো যুক্তি আন্তর্জাতিক আইনে পাওয়া যায় না।’
ভলকার তুর্ক বলেন, ‘এই আক্রমণগুলো অগ্রহণযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই এই ধরনের আক্রমণ বন্ধ করতে হবে এবং এই নৌকাগুলোতে থাকা মানুষদের বিচারবহির্ভূত হত্যা রোধে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে – তাদের বিরুদ্ধে যে অপরাধমূলক কাজের অভিযোগই থাকুক না কেন।’
ভলকার তুর্ক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে, জীবনের জন্য আসন্ন হুমকি সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেবলমাত্র শেষ অবলম্বন হিসাবে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রাণঘাতী শক্তির ব্যবহার অনুমোদিত।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, মার্কিন কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, হামলার শিকার নৌকাগুলোতে থাকা কোনো ব্যক্তিই অন্যদের জীবনের জন্য আসন্ন হুমকি বলে মনে হয়নি বা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তাদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী সশস্ত্র শক্তি ব্যবহারের ন্যায্যতার প্রমাণ মেলেনি। এই হামলার দ্রুত, স্বাধীন এবং স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া দরকার।