
সীমান্তের কাছে স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুই সেনা আহত হওয়ার পর প্রতিবেশী কম্বোডিয়ার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সই হওয়া শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে থাইল্যান্ড।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিস্ফোরণের পর থাই প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল বলেছেন, যুদ্ধবিরতির অধীনে সম্পাদিত সকল পদক্ষেপ স্থগিত থাকবে।
আনুতিন জোর দিয়ে বলেন, আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি বৈরিতা আমরা যেমন ভেবেছিলাম, তেমনই আছে…কমেনি।
আল জাজিরা জানিয়েছে, এ বিষয়ে কম্বোডিয়ান সরকারের তরফ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
গত জুলাই মাসে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আঞ্চলিক বিরোধের কারণে পাঁচ দিন ধরে সীমান্ত সংঘর্ষ চলে। এরপর গত মাসে মালয়েশিয়ায় আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি সই করে।
কয়েকদিনের যুদ্ধে কমপক্ষে ৪৩ জন নিহত হয় এবং সীমান্তে বসবাসকারী ৩ লাখেরও বেশি বেসামরিক লোক বাস্তুচ্যুত হয়।
থাই সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোমবার সিসাকেট প্রদেশে মাইন বিস্ফোরণে দুই সৈন্য আহত হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাথাফোন নারকফানিত বলেছেন, সেনাবাহিনী এখনো ঘটনার তদন্ত করছে যে, মাইনটি নতুনভাবে স্থাপন করা হয়েছিল কি না।
এর আগেও কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে নতুন মাইন স্থাপনের অভিযোগ করেছে থাইল্যান্ড। কম্বোডিয়ার সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
চুক্তির আগে ও পরে একই রকম স্থলমাইন বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী অনুসারে, থাইল্যান্ডের ১৮ জন কম্বোডিয়ান সৈন্যকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং উভয় পক্ষকে সীমান্ত থেকে ভারী অস্ত্র ও স্থলমাইন অপসারণ শুরু করতে হবে।
নাথাফোন বলেন, থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ান সৈন্যদের মুক্তি স্থগিত করবে। প্রাথমিকভাবে এই সপ্তাহে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত ছিল।
উভয় পক্ষই অস্ত্র অপসারণের বিষয়ে কিছু অগ্রগতির কথা জানিয়েছে। কিন্তু থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে মাইন অপসারণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছে।
কম্বোডিয়া বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতির সকল শর্ত মেনে চলছে এবং থাইল্যান্ডকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সৈন্যদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
জটিল সমস্যা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর গত জুলাই মাসে মালয়েশিয়ায় থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
এই বিরোধটি ট্রাম্পের কৃতিত্ব নেওয়া আটটি বিরোধের মধ্যে একটি, যা সমাধানে তিনি কৃতিত্ব নিয়েছেন। যদিও সমালোচকরা উল্লেখ করেছেন, তিনি যে শান্তি চুক্তিগুলো শুরু করতে সাহায্য করেছেন, সেখানে সম্ভবত শত্রুতা পুনরায় শুরু করতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, শতাব্দীব্যাপী চলা থাই-কম্বোডিয়ান সংঘাতের মূলে থাকা আঞ্চলিক বিরোধের মীমাংসার জন্য আরও বিস্তৃত শান্তি চুক্তি প্রয়োজন।