
আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকী আগামী ৯ অক্টোবর ভারত সফরে যাচ্ছেন। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর কাবুল থেকে দিল্লিতে এটিই প্রথম কোনো উচ্চপর্যায়ের সফর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে এ তথ্য জানিয়ে তার আসন্ন এই সফরকে ভারত-আফগানিস্তান সম্পর্কের নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখছে। আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেন ৯ থেকে ১৬ অক্টোবরের মধ্যে ভারত সফর করতে পারেন, সেজন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ মুত্তাকীকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থেকে সাময়িক ছাড় দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতীয় কূটনৈতিক মহল কয়েক মাস ধরে এই সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গত জানুয়ারি মাস থেকে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি এবং সিনিয়র আইএফএস কর্মকর্তা জে.পি. সিং দুবাইসহ বিভিন্ন নিরপেক্ষ স্থানে মুত্তাকী ও অন্যান্য তালেবান নেতাদের সঙ্গে একাধিক দফায় বৈঠক করেছেন।
এই আলোচনাগুলোতে মূলত ভারতের দেওয়া মানবিক সহায়তা, বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করা এবং শরণার্থীদের পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর চলতি বছরের ১৫ মে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের পর ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর মুত্তাকীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন, যা ২০২১ সালের পর প্রথম মন্ত্রীপর্যায়ের যোগাযোগ ছিল। ওই সময় জয়শঙ্কর আফগান জনগণের সঙ্গে ভারতের ‘ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বের’ কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
ভারত ইতোমধ্যে আফগানিস্তানে খাদ্যশস্য, ওষুধ ও উন্নয়ন সহায়তা বাড়িয়েছে। তালেবান সরকার ভারতকে জ্বালানি, অবকাঠামোসহ নানা খাতে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর ভারত ১ হাজার তাঁবু ও ১৫ টন খাদ্য পাঠিয়েছিল এবং পরবর্তীতে আরও ২১ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়।
এনডিটিভি বলছে, ভারতের জন্য আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর ঝুঁকিপূর্ণ হলেও কৌশলগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। মূলত সরাসরি তালেবান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে আফগানিস্তানে দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ রক্ষা, সন্ত্রাসী হুমকি প্রতিরোধ এবং পাকিস্তান-চীনের প্রভাব মোকাবিলা করতে চাইছে ভারত।