
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রণীত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশমালা প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেছে। দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য এই সনদকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করলেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে নতুন করে অনৈক্যের সুর দেখা দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৫৩ জন নাগরিক।
শনিবার (১ নভেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, জাতীয় ঐক্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মধ্যে ঐকমত্য না আসা পর্যন্ত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রয়োজন রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংবিধান সংশোধনের মতো গুরুতর বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে আলোচনা করা উচিত। নাগরিকদের প্রস্তাব— বর্তমান ২৭০ দিনের (নয় মাসের) সময়সীমা বাড়িয়ে দুই বছর পর্যন্ত করা হলে তা আরও ফলপ্রসূ হবে।
তারা আরও উল্লেখ করেন, অন্যান্য দেশে সংবিধান সংস্কারের আগে যেমন দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়, বাংলাদেশেও একইভাবে সময় বাড়ানো যেতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা আপত্তি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঐক্যের পরিপন্থি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তি মীমাংসা না করে সংবিধান সংশোধন আনলে দীর্ঘস্থায়ী অনৈক্য তৈরি হতে পারে এবং দেশের রাজনীতিতে নতুন সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
নাগরিকরা আরও বলেন, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় লেখক, চিন্তক, অ্যাক্টিভিস্ট ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের যুক্ত করা হলে বিভেদ কমবে এবং আলোচনা আরও সমৃদ্ধ হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে জাতীয় ঐক্যের ওপর। এই ঐক্য বজায় রাখার জন্য ঐকমত্য কমিশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
বিবৃতিতে সম্মতি জানান কবি কাজল শাহনেওয়াজ, রাজনীতি বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, অধ্যাপক আর রাজী, ইতিহাসবিদ গোলাম সারওয়ার, আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ, কথাসাহিত্যিক গাজী তানজিয়া, মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, সঙ্গীতশিল্পী অমল আকাশ, লেখক রাখাল রাহা, সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম সাব্বির, কবি ফুয়াদ সাকী, এক্টিভিস্ট শামীম রেজাসহ মোট ৫৩ জন নাগরিক।