
দেশের শেয়ার বাজারে গত সপ্তাহে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদরই বেড়েছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে এই বাজারে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ২৬ শতাংশের বেশী। ডিএসইর সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনকৃত মোট ৩৯৬টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৬৮টির, কমেছে ১০৫টির ও দর অপরিবর্তিত ছিল ২৩টির। আর লেনদেন হয়নি ১৭টির। এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৮ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১০ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি মূল্যসূচকেও বড় উত্থান হয়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৪২ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৪ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৬ শতাংশ। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ৬৭ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৫ দশমিক ৬২ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৫ শতাংশ। ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহ জুড়ে বেড়েছে ২৬ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৭ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
আলোচ্য সময়ে সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের গতিও বেড়েছে। সপ্তাহ জুড়ে ডিএসইতে মোট ৫ হাজার ৭২৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে লেনদেন ছিল ৪ হাজার ৫৩৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ২৬ দশমিক ৩২ শতাংশ। দেশের প্রধান এই শেয়ার বাজারে গত সপ্তাহে টাকার অংকে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানি হলো:
সিটি ব্যাংক, মালেক স্পিনিং, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সোনালী পেপার, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, বিচ হ্যাচারি, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট। এছাড়া, খাতভিত্তিক লেনদেনে ওষুধ ও রসায়ন খাতের আধিপত্য ছিল সবচেয়ে বেশি। লেনদেনচিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৮৯ শতাংশই হয়েছে এই খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৫১ শতাংশ দখলে নিয়েছে বস্ত্র খাত।
৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে ব্যাংক খাত। গত সপ্তাহে ডিএসইতে দুটি খাত বাদে সব খাতের শেয়ারেই ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে শেয়ারে সবচেয়ে বেশি ১০ দশমিক ২১ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন ছিল। এছাড়া জীবন বীমা খাতে ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ, কাগজ ও মুদ্রণ খাতে ১০ দশমিক শূন্য ৭ ও বস্ত্র খাতে ৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে পাট খাতে সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এছাড়া চামড়া প্রতিষ্ঠান খাতে দশমিক ৭৪ নেতিবাচক রিটার্ন ছিল। অপরবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়ে ১৫ হাজার ৩৫৭পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আলোচ্য সপ্তাহে সিএসইতে ১২৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৬৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।