
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহত্তম শহর নিউ ইয়র্কের নতুন মেয়র নির্বাচন এখন আঞ্চলিক গণ্ডি ছাড়িয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নতুন প্রার্থী জোহরান মামদানি একজন মুসলিম আমেরিকান। তিনি রাজ্য আইনসভায় কুইন্সের প্রতিনিধিত্ব করেন। মামদানি প্রাক্তন গভর্নর এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত অ্যান্ড্রু কুওমোর চেয়ে এগিয়ে আছেন। দলের প্রাথমিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মামদানির কাছে হেরে যাওয়ার পর তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গত ২৩ থেকে ২৭ অক্টোবর পরিচালিত কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ জরিপে মামদানি ৪৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। পরবর্তী স্থানে যাথাক্রমে কুওমো ৩৩ শতাংশ এবং স্লিওয়া ১৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
মামদানির জয়ের আভাসে ট্রাম্প শহর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল আটকে রাখার হুমকি দিয়েছেন। জীবনযাত্রার ব্যয়, অপরাধ এবং প্রতিটি প্রার্থী কীভাবে ট্রাম্পকে মোকাবেলা করবেন, তা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে এখন। ট্রাম্প এগিয়ে থাকা জোহরান মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির অধ্যাপক লিংকন মিচেল এএফপিকে বলেন, ‘মামদানী একজন অসাধারণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি সত্যিই এই মুহূর্তের চেতনাকে ধারণ করেছেন। এটি এমন একটি মুহূর্ত, যেখানে আমেরিকার বৃহত্তম শহরটিতে ট্রাম্প-বিরোধী একটি উচ্চকণ্ঠ জেগে উঠেছে। সত্যি বলতে নিউ ইয়র্কের মেয়র পদের জন্য একজন মুসলিম প্রার্থী একটি বিশাল ব্যাপার।’
প্রতিপক্ষদের ইসলামবিদ্বেষী মন্তব্য ও অপবাদের পর ৩৪ বছর বয়সী মামদানি পাল্টা জবাব দিয়েছেন। তিনি রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট – উভয় দলকেই সমালোচনা করেছেন এই বলে, ‘আমাদের শহরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ এখন এতটাই সাধারণ হয়ে গেছে যে, তা ভয়ানকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।’
এনওয়াইসি নির্বাচন বোর্ডের তথ্য অনুসারে, ২ নভেম্বর শেষ হওয়া প্রাথমিক ভোটের প্রথম পাঁচ দিনে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৬ জন নিবন্ধিত ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন। এছাড়া ৪৬ হাজার ১১৫ জন রিপাবলিকান এবং কোনো দলের সঙ্গে সম্পর্কিত নন- এমন ৪২ হাজার ৩৮৩ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন।
মামদানির অপ্রত্যাশিত আবির্ভাবের কারণ হলো তরুণ নিউ ইয়র্কবাসী। তরুণরা তার পক্ষে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালিয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, প্রায় ৯০ হাজার মানুষ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তার পক্ষে কাজ করেছে।
এক ডেইলি শো তে মামদানি বলেন, ‘এটা সত্যিই অসাধারণ, যখন লোকেরা অন্যান্য নিউ ইয়র্কবাসীদের সঙ্গে আমাদের ভালোবাসার শহর সম্পর্কে কথা বলে।’
মামদানির পক্ষে প্রচারণার নেতৃত্ব দেওয়া কুইন্সের এক কিশোর আবিদ মাহদি এএফপিকে বলেন, ‘যখন আমি জোহরান সম্পর্কে ভাবি, তখন আমার মনে হয় ২০১৬ এবং ২০২০ সালে অনেক আমেরিকানের কাছে প্রিয় বার্নি স্যান্ডার্স-এর মতো। তিনি অনেক দিক থেকে আমার কাছে বার্নি স্যান্ডার্স।’