
গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর সেখানকার বিধ্বস্ত শহরগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরও শক্ত করছে হামাস। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সশস্ত্র গোষ্ঠীটি গাজায় অভিযানে নেমেছে এবং বিরোধীদের সহযোগিতা করার অভিযোগে কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
গাজা যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শুক্রবার থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, সোমবার হামাস অন্তত ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে এবং আরও চারটি জিম্মির মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজায় আটক আরও চারজন বন্দীর মরদেহ ইসরায়েলে আনা হয়েছে।
হামাস তাদের আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, চোখ বাঁধা ও মাটিতে হাঁটু গেড়ে থাকা আটজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে রাস্তায় গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। হামাস ওই ব্যক্তিদের ‘বিরোধীদের সহযোগী ও অপরাধী’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
গাজা নগরী থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর গাজার উত্তরাঞ্চলে হামাস সরকারের কালো মুখোশধারী সশস্ত্র পুলিশ আবার রাস্তায় পাহারা দিতে শুরু করেছে। হামাসের একটি নিরাপত্তা ইউনিট গাজায় অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী ও অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে, যাদের কেউ কেউ ইসরায়েলের সমর্থন পেয়েছে বলে হামাসের অভিযোগ।
ভিডিও ফুটেজটি সম্ভবত সোমবার সন্ধ্যার, যা থেকে বোঝা যায় যে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামাসের বিভিন্ন নিরাপত্তা ইউনিট এবং অন্যান্য সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। গাজার নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, হামাসের একটি নিরাপত্তা ইউনিট গাজায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে মাঠপর্যায়ে অভিযান পরিচালনা করছে।
সম্প্রতি গঠিত এই ইউনিটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রতিরোধ বাহিনী’। ওই সূত্রটি আরও বলেছে, ‘আমাদের বার্তা একেবারে পরিষ্কার। যারা অপরাধী অথবা নাগরিকদের জন্য নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করবে, গাজার মাটিতে তাদের কোনো স্থান নেই।’ ইয়াহিয়া নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ‘বিরোধীদের সঙ্গে যারা সহযোগিতা করেছে, তাদের নির্মূল করতে গাজায় তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে এবং তা এখনো চলছে।’
গাজার আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনীর এবং হিল্লেস পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলেছে।’ সশস্ত্র হিল্লেস পরিবার রাজনৈতিকভাবে ফাতাহ পার্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। গাজা নগরীর পূর্বাঞ্চলের শহর শুজাইয়াতেও লড়াই চলছে, যা কথিত ‘ইয়েলো লাইন’–এর কাছে অবস্থিত—এই লাইনের পরে ইসরায়েলি বাহিনী এখনো সক্রিয় আছে এবং গাজার প্রায় অর্ধেকটা তারা নিয়ন্ত্রণ করছে।
ছবি: এএফপি