
আলু রপ্তানির নামে সরকারের নগদ প্রণোদনার টাকা আত্মসাতের একটি চাঞ্চল্যকর কৌশল উদঘাটন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ‘অন্তরা কর্পোরেশন’ নামের কাগুজে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ৯৬টি ভুয়া বিল অব এক্সপোর্ট দাখিলের মাধ্যমে প্রায় ৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা প্রণোদনা হাতিয়ে নেওয়া হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলায় চট্টগ্রাম কাস্টমসের বর্তমান ও সাবেক ১০ কর্মকর্তা এবং ৫ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
কাস্টমস কর্মকর্তারা হলেন— সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, বাসুদেব পাল, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. আব্দুর রাজ্জাক, দিদারুন নবী, সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রনি বড়ুয়া ও মো. আরিফুর রহমান, বর্তমান কর্মকর্তা ফারহানা আকরাম ও মো. মাহবুবুর রহমান।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছেন— অন্তরা কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী মো. মুশতাক খান, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ. অ্যান্ড জে. ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল-এর অংশীদার মো. আবদুল জলিল আকন ও মো. আলতাফ হোসেন, প্যান বেঙ্গল এজেন্সিজ-এর মো. সেলিম, এবং জি. আর. ট্রেডিং করপোরেশন সিঅ্যান্ডএফ লিমিটেড-এর মো. আব্দুল রহিম।
২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে “তাজা আলু রপ্তানি” দেখিয়ে আসামিরা কাস্টমসের অ্যাসিকিউডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ৯৬টি ভুয়া বিল অব এক্সপোর্ট জমা দেন। তদন্তে দেখা যায়, কোনো অফ-ডকে পণ্য আনা বা রপ্তানির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ সব নথিই ছিল কাগুজে।
ভুয়া শিপিং বিল, ক্রেডিট রেটিং, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের সনদসহ নানা কাগজ ব্যাংকে দাখিল করে আসামিরা সরকারের ২০ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা গ্রহণ করেন।
এই অর্থ তারা উত্তরা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ও ব্যাংক এশিয়ার দিলকুশা শাখা থেকে উত্তোলন করেন।
দুদক জানিয়েছে, আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করা হয়েছে।