
যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট প্রশাসনে অভূতপূর্ব এক পরিস্থিতি তৈরি হলো। নির্ধারিত আদালতে শুনানির ঠিক কয়েক মিনিট আগে গত বুধবার চ্যাপটার ১১ দেউলিয়া সুরক্ষার জন্য আবেদন করেছে ইউএসএ ক্রিকেট (ইউএসএসি)। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো আইসিসি সদস্য দেশ দেউলিয়া ঘোষণা করলো।
কলোরাডোর আদালতে আমেরিকান ক্রিকেট এন্টারপ্রাইজেসের (এসিই) করা মামলার প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞা শুনানি শুরুর আগে হঠাৎ দেউলিয়া ঘোষণার তথ্য জানায় ইউএসএ ক্রিকেটের আইনজীবীরা। দেউলিয়া আবেদন করায় শুনানি আপাতত স্থগিত হয়ে গেছে। ঘটনাটিকে ‘সময়ের অপব্যবহার’ বলে তীব্র সমালোচনা করেছে এসিই। সংস্থাটির এক প্রতিনিধি বলেন, ‘ইউএসএ ক্রিকেট জানত এই শুনানির ফল তাদের বিপক্ষে যাবে। তারা অবিবেচকের মতো মার্কিন ক্রিকেটের ভবিষ্যৎকে ঝুঁকিতে ফেলেছে, নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ আর ব্যক্তিগত এজেন্ডাকেই প্রাধান্য দিয়েছে।’
দেউলিয়া সংক্রান্ত নথিতে ইউএসএ ক্রিকেটের আর্থিক চিত্রও উঠে এসেছে। ব্যাংকে থাকা নগদ অর্থ, পাওনা টাকার হিসাব ও অফিস সরঞ্জাম মিলিয়ে সম্পদের পরিমাণ সীমিত। অন্যদিকে, অনিরাপদ দেনার পরিমাণ অর্ধ মিলিয়ন ডলারের বেশি। খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তিগুলোকেও অধ্যায় ১১ আওতায় নেওয়া হয়েছে, যার মেয়াদ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। ফলে এ চুক্তিগুলোর অর্থপ্রদান বা শর্তাবলিতে পরিবর্তনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিতর্কিত চুক্তি নিয়ে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছিল এসিই। তারা জানিয়েছিল, ইউএসএ ক্রিকেট যদি স্বেচ্ছায় প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞা মেনে নেয়, তাহলে পেমেন্ট চালু রেখেই বিষয়টি সালিশি আদালতের দিকে নিয়ে যাওয়া যাবে। কিন্তু ইউএসএ ক্রিকেট সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এমনকি আইসিসি ও ইউএসওপিসির বারবার আহ্বান সত্ত্বেও বোর্ড পদত্যাগেও রাজি হয়নি তারা।
এর আগে গত মঙ্গলবারই বোর্ডে অস্থিরতা তৈরি হয়। পরিচালক অঞ্জ বালাসুকে ফিরিয়ে আনা হয় এবং দেউলিয়া ঘোষণা করে আইসিসির ওপর চাপ সৃষ্টি করার পরিকল্পনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বালাসু ভোট দিয়েছিলেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। এখন পরিস্থিতি পুরোপুরি অনিশ্চিত। খেলোয়াড়দের চুক্তির অর্থপ্রদান আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে, আর এসিইর সঙ্গে আইনি লড়াইও আপাতত স্থগিত থাকছে দেউলিয়া প্রক্রিয়া চলাকালীন। যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট প্রশাসনে এই সংকট ভবিষ্যতের পথকে আরও জটিল করে তুললো।