
অফিসের পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য শুধু পরিপাটি সাজসজ্জা বা নিয়মনীতি যথেষ্ট নয়—প্রয়োজন সুন্দর মনের সহকর্মীও। কিন্তু বাস্তবে সবাই আপনার মনের মতো হবেন না। কেউ কেউ আচরণ বা কথাবার্তায় এমন হতে পারেন, যাদের কারণে কর্মস্থলের পরিবেশ অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। ইংরেজিতে যাদের বলা হয় “টক্সিক কলিগ”—এরা অজান্তেই চারপাশে বিষ ছড়ান।
আপনার অফিসেও যদি এমন কোনো টক্সিক সহকর্মী থাকেন, তাহলে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক—
সীমা নির্ধারণ করুন (Set Boundaries)
টক্সিক সহকর্মীর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখাই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। প্রয়োজনে সুন্দরভাবে কিন্তু দৃঢ়ভাবে “না” বলুন। তাদের আপনার ব্যক্তিগত বা মানসিক জগতে প্রবেশ করতে দেবেন না। কথোপকথনে পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন এবং ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
তাদের ড্রামায় জড়াবেন না (Avoid Their Drama)
টক্সিক ব্যক্তিরা সাধারণত অন্যদের প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে টিকে থাকেন। আপনি যত বেশি মনোযোগ দেবেন, তারা ততই আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। শান্ত ও স্থিরভাবে প্রতিক্রিয়া জানান, গসিপ বা তর্কে জড়াবেন না। আপনার শান্ত থাকা মানেই মানসিক পরিপক্কতার প্রকাশ, যা তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ করবে।
সবকিছু নথিভুক্ত রাখুন (Keep Records)
যদি টক্সিক সহকর্মীর আচরণ আপনার কাজ বা সুনাম নষ্ট করতে শুরু করে, তাহলে প্রত্যেকটি ঘটনা, ইমেল বা কথোপকথন লিখিতভাবে সংরক্ষণ করুন। ভবিষ্যতে বিষয়টি যদি ব্যবস্থাপনা বা HR-কে জানাতে হয়, এই নথিপত্র হবে আপনার সবচেয়ে শক্ত প্রমাণ।
সহায়তা নিন (Seek Support)
কাজের বাইরে বিশ্বস্ত বন্ধু, সহকর্মী বা পরামর্শদাতার সঙ্গে কথা বলুন। মানসিক সমর্থন টক্সিক আচরণের প্রভাব কমায় এবং আপনাকে ইতিবাচক থাকতে সাহায্য করে। মনে রাখবেন—একাকীত্ব টক্সিক পরিবেশের সবচেয়ে বড় সহায়ক।
প্রয়োজনে HR বা সিনিয়র কর্তৃপক্ষকে জানান (Report Professionally)
যদি কোনো সহকর্মীর আচরণ পেশাদার সীমা ছাড়িয়ে যায় বা কর্মস্থলের নীতিবিরোধী হয়, তবে ঘটনাগুলো তথ্যসহ HR বা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে জানান। যত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে, তত দ্রুত আপনি ও আপনার সহকর্মীরা নিরাপদ কর্মপরিবেশ ফিরে পাবেন।
অফিসে টক্সিক সহকর্মী থাকা মানেই কাজের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাওয়া নয়। সচেতনতা, সীমা বজায় রাখা ও সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নেওয়াই হতে পারে আপনার সেরা অস্ত্র।