
পেরুর কংগ্রেস দেশটির প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তেকে অপসারণের পক্ষে ভোট দিয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশে যখন অপরাধের উর্ধ্বগতি ও জনঅসন্তোষ চরমে, তখন এই অভূতপূর্ব রাজনৈতিক ঘটনা ঘটল।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) গভীর রাতে শুরু হয়ে শুক্রবার ভোরে শেষ হওয়া এক দীর্ঘ অধিবেশনে আইনপ্রণেতারা বলুয়ার্তের বিরুদ্ধে ‘নৈতিক অযোগ্যতা’ অভিযোগে অভিশংসনের আলোচনা করেন। কয়েক ঘণ্টা আগেই রাজনৈতিক দলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে অপসারণের দাবি জানায়। কংগ্রেস বলুয়ার্তেকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য হাজির হওয়ার আহ্বান জানালেও, তিনি তাতে সাড়া দেননি।
এই সিদ্ধান্ত আসে রাজধানী লিমায় এক কনসার্টে গোলাগুলির ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর, যা দেশের ক্রমবর্ধমান অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ে নাগরিকদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তোলে।
কংগ্রেসের সদস্যরা অভিযোগ করেন, বলুয়ার্তের প্রশাসন অপরাধ দমন ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আনা চারটি অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। প্রতিটি প্রস্তাবের জন্য প্রয়োজনীয় ৫৬ ভোটের সীমা অতিক্রম করায় ১৩০ সদস্যের এককক্ষবিশিষ্ট কংগ্রেসে অভিশংসন প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার আগে কংগ্রেস বলুয়ার্তেকে আত্মপক্ষ সমর্থনের শেষ সুযোগ দিলেও তিনি উপস্থিত হননি। এরপর মধ্যরাত পেরোনোর পরপরই ১২৪ জন আইনপ্রণেতা তার বিরুদ্ধে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন। এর ফলে তিনি পদচ্যুত হন।
এটি ছিল বলুয়ার্তেকে ক্ষমতাচ্যুত করার নবম প্রচেষ্টা, তবে এবার ভিন্নতা ছিল রাজনৈতিক ঐক্যে—প্রায় সব প্রধান দলই তার অপসারণে একমত হয়েছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, অপরাধ বৃদ্ধির চাপ, জনঅসন্তোষ ও সরকারের অদক্ষতা মিলেই পেরুর সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটি সবচেয়ে নাটকীয় রাজনৈতিক মোড় তৈরি করেছে।