
ভিয়েতনামে এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবল গ্রুপ পর্বের বাছাই খেলা শুরু হয়েছে। পরশু বাংলাদেশ দল প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ০-২ গোলে হেরেছে ভিয়েতনামের বিপক্ষে। খেলা দেখেছেন ফুটবল কোচ কামাল বাবু। হতাশ হয়েছেন। সাইফুল বারী টিটু অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কোচ হলেও তিনি অসুস্থ হয়ে প্রথম খেলার সময় হাসপাতালে ছিলেন। কোচের দায়িত্ব পড়েছিল হাসান আল মামুনের ওপর। গতকালও টিটু ছিলেন হাসপাতালে।
ভিয়েতনামের বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স হতাশ করেছে কোচ কামাল বাবুকে। দেশের ফুটবলে কামাল বাবু তরুণ খেলোয়াড় নিয়ে দল গঠন করেন এবং সফলতা তার আছে। অনূর্ধ্ব-২৩ দলটার খেলা তার চোখে জ্বালা ধরিয়েছে। একটা দেশের অনূর্ধ্ব-২৩ দল হচ্ছে জাতীয় দলের প্রতিচ্ছবি। আগামীর জাতীয় দলটা কেমন হতে যাচ্ছে সেটা দেখার আয়না অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবল দল। কিন্তু এই আয়নায় ফুটবলের চেহারা দেখে মুখ লুকাতে হয়। ছন্নছাড়া পারফরম্যান্স।
ভিয়েতনামের তরুণ ফুটবলারদের পারফরম্যান্সের কাছে বাংলাদেশের রিমন, জাহিদ, জায়ান আহমেদ, আকাশ, শাকিল আহাদ তপু, মজিবুর রহমান জনি, কিউবা মিচেলরা নজর কাড়তে পারেননি। অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন খেলোয়াড়রা। খেলায় হারের পর সহকারী কোচ হাসান আল মামুনের কণ্ঠেও হতাশা। তিনিও আত্মসমর্পণই করলেন। যা কিছু করতে চেয়েছিলেন তার কোনো কিছুই নাকি হয়নি।
হাসান আল মামুন বলেন, ‘আমাদের শক্তি সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা একটা ব্লকে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা (ভিয়েতনাম) আমাদের প্ল্যানটাকে বাস্তবায়ন করতে দেয়নি।’ মামুন জানিয়েছেন তারা যখন প্রতিপক্ষের ওপর বল বিল্ডআপে গিয়েছিলেন তখন ভিয়েতনাম প্রেসিংয়ে ঠেকিয়ে দিয়েছে। দুই উইং দিয়ে ক্রস করে আক্রমণে গেলেও আক্রমণগুলো ফিনিশ করতে পারেনি বাংলাদেশ। স্ট্রাইকিং পজিশনে বাংলাদেশকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মোদ্দা কথা হাসান আল মামুনের কথা আমরা আমাদের প্ল্যানে সফল হইনি।’
ফুটবল কোচ কামাল বাবু মনে করেন অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে অন্যান্য দেশ যেভাবে পরিকল্পনা করে এগিয়ে যায় আমাদের, সেই হিসাব করলে কোনো পরিকল্পনাই ছিল না। প্রশ্ন উঠছে কেন এই দলটার দায়িত্ব নিতে চাননি দুই কোচ কায়সার এবং জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুরা। এখন এটা পরিষ্কার। পরিকল্পনাহীনভাবে এগোলে এর চেয়ে বেশি কিছু হবে না। কামাল বাবু বলেন, ‘এক সময় নিজে উজাড় করে দেশের জন্য খেলা, আর কোচ হয়ে অন্য ছেলেদের কাছ থেকে উজাড় করে খেলা আদায় করা-এক জিনিস নয়।’
তিনি বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে কোচদের সংগ্রহ করা হয়, নিয়োগ দেওয়া হয় ক্লাব কোচিংয়ের পারফরম্যান্স দেখে, আর আমাদের এখানে কোচ করা হয় ওমুক ন্যাশনাল টিমের প্লেয়ার ছিল, এত বড় সার্টিফিকেট আছে, ইংরেজি বলতে পারে, মিডিয়ার সামনে কথা বলতে পারে-এসব বিবেচনা করা হয়। লবিংয়ের জোরের কথা না হয় না-ই বললাম। আরে ভাই শিক্ষকতা আর কোচিং এক জিনিস না, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে একজন সত্যিকারের কোচ হন, যদি তা না হতো তাহলে পৃথিবীর সব জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা কোচ হয়ে যেত।’
কামাল বাবু বলেন, ‘ফুটবলের করুণ অবস্থা দেখে এই কথাগুলো বলতে বাধ্য হলাম কারণ ফুটবলের অর্থ আমার রক্তে বিদ্যমান, আমি একজন বাঙ্গাল, আমি একজন বাঙালি। ফুটবলের জন্য হৃদয় আমাদেরও কাঁদে।’